চিহ্নিত মহলের অপচেষ্টায় দেশের ২৯৯টি কলেজ শিক্ষকদের আত্তীকরণে দীর্ঘসূত্রিতা সৃষ্টি হয়েছে। এমন অভিযোগ করে এই পরস্থিতির অবসানে ৭ দফা দাবি জানিয়েছে সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতি (সকশিস) সিলেট জেলা শাখার নেতারা। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তারা দাবিগুলো তুলে ধরেন।
দাবির মধ্যে রয়েছে দ্রুত বিষয়ভিত্তিক সমন্বিত পদ সৃজন ও পদায়ন, বৈধ শিক্ষক-কর্মচারীর আত্তীকরণ, আত্তীকরণ বিধিমালা অনুযায়ী পদায়ন, ক্যাডার ভূক্তির বিধিমালা প্রণয়ন, দ্রুত পদ সোপান তৈরি ও পদোন্নতির শর্তাবলী প্রণয়ন, শতভাগ চাকরিকাল গণনা, কার্যকরী চাকরিকাল পদোন্নতিসহ কার্যকর করা এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বেতন স্কেল নির্ধারণ।
মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন সকশিসের সিলেট জেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক দীপু কুমার গোপ, জুলহাস আহমদ, সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি শাহেদ আহমদ, সহ সভাপতি কমলপানি চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী, সহ-সভাপতি আদিবা খানম, ক্রীড়া সম্পাদক যীশুতোষ দাস, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, গোপিকা রঞ্জন দাস (কাজল) ও অসীম কুমার তালুকদার।
শিক্ষক নেতারা বলেন, সরকারিকরণের লক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট কলেজগুলোর সম্পদ ও অন্যান্য বিষয় যাচাই-বাছাই ও হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। কিন্তু ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির’ আপত্তি ও অসহযোগিতার কারণে এক বছর সময় অপচয় করে ২০১৮ খিষ্টাব্দের ১২ আগস্ট প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের আদেশ জারি হয়। ফলে প্রায় দুই হাজার শিক্ষক কর্মচারী সরকারিকরণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে অবসরে চলে গেছেন। সরকারিকরণের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে ৯টি আঞ্চলিক অফিসের পরিচালক ও সহকারি পরিচালকের নেতৃত্বে কলেজগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিদর্শন টিম পরিদর্শন প্রতিবেদনও মাউশিতে জমা দিয়েছেন। এসব পরিদর্শন প্রতিবেদনকে মূল্যায়ন না করে ২০১৮ খিষ্টাব্দের ৭ এপ্রিলের পত্রানুসারে ২৯৯টি কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের আত্তীকরণের জন্য শিক্ষা স্তরের ১ম ও শেষ অধিভূক্তির পত্রাদেশের কপিসহ প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্ট ডিসি/ ইউএনওর মাধ্যমে যাচাইয়ের পর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ২০১৯ খিষ্টাব্দের ১৬ মে জমা নেয়। জমাকৃত ফাইলসমূহ যাচাই বাছাই না করে কপিগুলোর মূল কাগজ মাউশিতে পূনঃরায় উপস্থাপন করতে হচ্ছে। উপস্থাপিত কলেজগুলোর কাগজপত্রাদি যাচাই করে মাউশি যে সমস্ত কলেজের ফাইল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে সেগুলো আবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মাউশিতে এনে পুনরায় যাচাই-বাছাই হচ্ছে। এভাবে যাচাই-বাছাই করা হলে কত সময় লাগবে তা ভেবে দেখার বিষয়।
এভাবে দীর্ঘসূত্রিতা, কালক্ষেপন ও হয়রানি বৃদ্ধি হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তারা বলেন, ইতোমধ্যেই প্রায় তিনবছর সময় লেগেছে। এ কারণে সাধারণ অভিভাবক, শিক্ষার্থীসহ প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারিকরণের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এই বঞ্চনার অবসানের জন্য ৭ দফা দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবি জানান।