ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান মামুনকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা ও এক বছরের জেল দিয়েছেন আদালত। বন্ধুত্বের সম্পর্কের সূত্র ধরে ২৪ লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন তিনি। তারমধ্যে ৬ লাখ টাকা অস্বীকার করে ভুক্তভোগীকে ১৮ লাখ টাকার চেক দেন। কিন্তু অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় চেকটি ডিজঅনার হয়। পরে ভুক্তভোগী কামরুল ইসলাম (চাঁন মিয়া) আদালতে চেক জালিয়াতির মামলা করেন। বৃহস্পতিবার ওই মামলার রায়ে আদলাত মনিরুজ্জামান মামুনকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা ও এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
জানা গেছে, ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান মামুন ও রাজৈ ইউনিয়নের চান্দাব গ্রামের আরফান আলীর ছেলে। কামরুল ইসলাম চাঁন মিয়ার মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব ছিল। ওই সম্পর্কের সূত্রেই কামরুল মামুনকে ধার দিয়েছিলেন ২৪ লাখ টাকা। টাকাগুলো ফেরত দেওয়ার কথা ছিলো দু-এক মাসের মধ্যেই। কালক্ষেপণ করায় স্থানীয় দেন-দরবারে ২৪ লাখ টাকার মধ্যে মামুনের মায়ের হাতে দেওয়া ৬ লাখ টাকার বিষয়টি অস্বীকার করে মামুন। পরে ভুক্তভোগী কামরুলকে ন্যাশনাল ব্যাংকের ভালুকা শাখার ১৮ লাখ টাকার চেক দেয় মামুন। ওই টাকা তুলতে ব্যাংকে যান কামরুল। কিন্তু মামুনের সেই অ্যাকাউন্টে ছিলনা কোন টাকা। চেকটি ডিজঅনার হলে ভুক্তভোগী কামরুল ইসলাম (চাঁন মিয়া) ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের তৃতীয় জেলা দায়রা জজ আদালতে চেক জালিয়াতির মামলা করেন।
মামলা চলাকালে জালিয়াতির বিষয়টি অস্বীকার করে স্বাক্ষরটি ভুয়া দাবি করেন মামুন। এক্সপার্টের আবেদন করলে টেস্টে হস্তরেখায় তার স্বাক্ষরের মিল পাওয়া যায়। পরে ছাত্রলীগ সভাপতি মামুন আদালতের কাছে নিজের অপরাধ স্বীকার করে আদালতের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধের সময় চেয়ে নেন। দেই-দিচ্ছি করে আদালতে তারিখ পরিবর্তন দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেন। এরইমধ্যে ভালুকা তিতাস গ্যাসের অস্থায়ী পেট্রোলম্যান ভূক্তভোগী ওই কামরুল ইসলাম আদালত পাড়ায় মামলার পেছনে দৌড়ঝাঁপ পারতে পারতে চাকরিচ্যুতও হন।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) সকালে ময়মনসিংহের তৃতীয় জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাবিবুল্লাহ ওই মামলার চুড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ওই বিচারিক বেঞ্চ ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান মামুনকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা ও এক বছরের কারাদণ্ড দেন।