কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে স্কুলছাত্র মহিউদ্দিন প্রবাল (১৭) হত্যাকাণ্ডের সাত মাস পর চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গত সোমবার আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করা হয়। আজ বুধবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. রমিজুল হক গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এসব তথ্য প্রকাশ করেন।
এই চারজন হলেন কিশোর গ্যাংয়ের নেতা মো. অন্তর মিয়া (২৬), তাঁর বাবা জিল্লুর রহমান (৬৫), ভাই অনীক মিয়া (২০) ও ঘনিষ্ঠ মো. সাকিব (২২)।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, প্রবাল নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে। ভৈরবে হোসেন ভূঁইয়ার মালিকানাধীন মাতৃকা জেনারেল হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি হাসপাতাল আছে। তিনি পরিবার নিয়ে ভৈরবে থাকেন। অন্তর ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর এলাকায় বাসিন্দা। এলাকায় তাঁর নেতৃত্বে একদল কিশোর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। অন্তর এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের নেতা হিসেবে পরিচিত। প্রবালের সঙ্গে অন্তরের ভালো সম্পর্ক ছিল। প্রবাল স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। খুন হওয়ার কিছুদিন আগ থেকে অন্তরের সঙ্গে প্রবালের সম্পর্কের ফাটল ধরে।
বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অন্তরের বাবা জিল্লুর রহমানের মালিকানাধীন শাকিল মোটরস নামে একটি দোকান আছে। গত ১ জুন রাত ১০টার দিকে শাকিল মোটরসের ঘর থেকে প্রবালের মরদেহ উদ্ধার করে সিআইডি। এ ঘটনায় ৩ জুন প্রবালের বাবা হোসেন ভূঁইয়া বাদী হয়ে অন্তরকে প্রধান অভিযুক্ত করে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
মামলা হওয়ার পর পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। তবে প্রধান আসামি অন্তর ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। ঘটনার ১০ দিন পর অন্তর নিজেই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। অভিযোগপত্রে নাম থাকা সাকিব গ্রেফতার হওয়ার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
অন্তরসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন প্রবালের বাবা হোসেন ভূঁইয়া।