ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আটটি বিভাগের সহযোগী, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকসহ ১৩টি শিক্ষক পদে পুনঃনিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রত্রিকায় প্রকাশিত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বৃহস্পতিবার বিভিন্ন ফেসবুক আইডি, পেজ ও গ্রুপে দেখা যায়। কিন্তু ‘iuian- ইবিয়ান’ নামের একটি ফেসবুক পেজে প্রচারিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নিচে উক্ত পদগুলোতে আবেদন করার অপশনযুক্ত একটি লিংক দেখা যায়। এই লিংকে ঢুকলে চাওয়া হচ্ছে প্রার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য ও জীবন বৃত্তান্ত। বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। পেজটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা পরিচালনা করেন বলে জানা গেছে। তবে ছাত্রলীগে তার কোনো পদ ছিল না।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সত্যায়িত কোনো অনলাইন মাধ্যম ছাড়া ব্যক্তি নিয়ন্ত্রিত কোনো মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ পদে আবেদন গ্রহণ ও সংরক্ষণ করা সম্পূর্ণ আইনের লঙ্ঘন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. নওয়াব আলী খান।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে ‘ইবিয়ান’ নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে ‘শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি’ ক্যাপশন দেওয়া একটি ছবি ও লিংক প্রচার করা হয়। লিংটির এক পাশে ‘APPLY NOW’ লেখা একটি অপশন আসে। অপশনে ঢুকলে প্রথমে পেজের তথ্য দেখানোর পর আবারও ‘APPLY NOW’ অপশন দেখা যায়। সেখানে ক্লিক করলে প্রার্থীর নাম, ঠিকানা, ইমেইল ও মোবাইল নাম্বারসহ ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে জীবনবৃত্তান্ত যুক্ত করে আবেদনের অপশনও দেখা যায়। এরপর সেন্ড অপশনে ক্লিক করলে অ্যাপ্লিকেশন সেন্ড হয়েছে বলে জানানো হয়। সেন্ড হওয়ার পর একটি ফিরতি মেসেজও দেওয়া হয় পেজটি থেকে। পেজটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন সাজুর নিয়ন্ত্রিত বলে জানা গেছে। এই পেজটির নামে একটি ফেসবুক গ্রুপও পরিচালনা করেন তিনি। সেই গ্রুপের মডারেটর আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিহাব উদ্দিন বলেন, ‘আমি গ্রুপের মডারেটর হিসেবে আছি। কিন্তু পেজের নিয়ন্ত্রণ সাজ্জাদ হোসেন সাজু ভাইয়ের নিকট। একমাত্র তিনিই পোস্ট করতে পারেন।’
এবিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. নওয়াব আলী খান বলেন, ‘যে কোনো মিডিয়া বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে পারে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সত্যায়িত কোনো অনলাইন মাধ্যম ছাড়া আবেদনের তথ্য গ্রহণ ও সংরক্ষণ বিধি সম্মত নয়। এই দায়িত্ব কেবল বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের, অন্য কারও না।’
এবিষয়ে আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক আহসান-উল-আম্বিয়া বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুমোদনের পর যে কেউ প্রচার বা প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু এই বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে কেউ সিভি আবেদন করতে পারে না। এর পিছনে অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে আমি মনে করি। আজকের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। এর সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া চলছে।’
এবিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘আমি একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পুনঃঅনুমোদন দিয়েছি। এরকম কোনো ফেসবুক পেজ বা গ্রুপে বিজ্ঞাপন দিতে বলা হয়নি। এসব স্থানে আবেদন করে যদি কেউ প্রতারিত হয় তবে সে দায়ভার তাদের। তারা কেন এ ধরনের প্রচারণা করলো সেটি আইসিটি সেলকে বলছি। পরবর্তী করণীয় তারা ঠিক করবে।’
এবিষয়ে সাজ্জাদ হোসেন সাজু বলেন, ‘এটি একটি টেকনিক্যাল ভুল। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই কাজ করা হয়নি। পরে পোস্টটি ডিলেট করা হয়েছে।’