রাজধানী ধানমন্ডির ইউল্যাব ইউনির্ভাসিটির ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রী ধর্ষণ এবং পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় সাউথইস্টের আইন বিভাগের ছাত্র রাফিদ সাদমানের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাসের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে আসামিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট থানার এসআই (নিরস্ত্র) শ্যামল আহমেদ আসামির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
এ সময় বাদীপক্ষে অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান আসামির রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করে শুনানি করেন। তিনি বলেন, আসামি ভিকটিমকে বিভিন্ন সময় ফুঁসলিয়ে এবং পরবর্তীতে চেতনানাশক ওষুধ সেবন করে ধর্ষণ করে। তার রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি। অন্যদিকে আসামির পক্ষে মৃধা মো. রাশেদ সারোয়ার পলাশ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন খারিজ করে আসামির এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, পরিচয়ের সুবাধে ভুক্তভোগী ছাত্রী এবং আসামির কথাবার্তা হয়। সেই সুবাদে বিভিন্ন স্থানে তাদের দেখা হয়। একপর্যায়ে গত বছরের ৩০ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে ভুক্তভোগী ছাত্রী আসামি সাদমানের সাথে উত্তরায় এক বন্ধুর বাসায় দেখা করেন। কথাবার্তা বলার একপর্যায়ে সাদমান সেই ছাত্রীকে কোমল পানীয়ের সাথে কিছু মিশিয়ে খাওয়ানোর পর সে অসচেতন হয়ে পড়ে। ভুক্তভোগী ছাত্রী অচেতন থাকা অবস্থায় সাদমান তাকে তার বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে বিবস্ত্র করে মোবাইলে ভিডিও করে। ভুক্তভোগী ছাত্রীর জ্ঞান ফিরলে আসামি ভিডিও দেখিয়ে তাকে বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখিয়ে রাতে বাসায় রেখে দেয় এবং তাকে ধর্ষণ করে। পরদিন ভুক্তভোগী ছাত্রী আসামির বাসা থেকে বের হয়ে নিজের বাসায় চলে আসে।
এরপর আসামি ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় তার বাসায় নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। গত ৮ নভেম্বর আসামি ভুক্তভোগী ছাত্রীকে তার বাসায় যেতে বলে। সে বাসায় যেতে রাজি না হওয়ায় আসামি সাদমান ওই ভিডিও গুগল ড্রাইভের মাধ্যমে তাকে পাঠায় এবং তার সাথে দেখা না করলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। ভুক্তভোগী ছাত্রী বাধ্য হয়ে গত ২৫ ডিসেম্বর সাদমানের বাসায় গেলে তাকে আবারও ধর্ষণ করা হয়। পরে নিরুপায় হয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী ঘটনার বিষয়ে পরিবারকে জানায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা সোমবার ক্যান্টনমেন্ট থানায় পর্নোগ্রাফি আইন এবং ধর্ষণের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন।