নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমানের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার রাতে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে শিক্ষক হাফিজুরকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামি ওই শিক্ষক হাফিজুর রহমানকে গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত শিক্ষক হাফিজুর রহমান উপজেলার মিরাট ইউপির মেরিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত আশেক আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, শিক্ষক হাফিজুর রহমান বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নানাভাবে যৌন হয়রানি করে আসছিল। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের যৌন হয়রানির অভিযোগে কয়েকবার মিটিং করে তাকে সতর্কও করা হয়। এরপরেও ওই শিক্ষকের এমন আচরণের পরিবর্তন না হওয়ায় বিচারের দাবিতে রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয় ঘেরাও করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় ৫ ঘণ্টা পর বিকেল ৩টার দিকে শিক্ষককে শাস্তির আশ্বাস দিয়ে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছাত্রী প্রতিদিনের ন্যায় ২০ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে স্কুলে যায়। এদিন দুপুর ১২টায় ক্লাস চলাকালিন সময় ওই শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান অফিস রুমে ডেকে নিয়ে প্রথমে শিক্ষার্থীকে দিয়ে মাথা টিপিয়ে নেয়। এ সময় শিক্ষক হাফিজুর ওই শিক্ষার্থীর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন নিপীড়ন করে। এরপর ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি পরিবারকে জানায়।
তারপর ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজন বিদ্যালয়ের সভাপতি, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতিসহ বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েও কোন সুরহা না পেয়ে ঘটনাটি গ্রামের লোকজনদের জানালে ওই শিক্ষকের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করার বিষয় উঠে আসে। এরপর স্থানীয়া গ্রামের লোকজন নিয়ে রবিবার সকালে বিদ্যালয়ে গিয়ে ওই শিক্ষকের বিচারের দাবিতে বিদ্যালয় ঘেরাও করে তাকে অবরুদ্ধ করে।
রাণীনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে রবিবার রাতে শিক্ষক হাফিজুরকে আসামি করে যৌন নিপীড়নের মামলা দায়ের করেন। মামলায় ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করে সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।