এক স্কুলছাত্রীর অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে ৩ বছর ধরে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগে আয়াতুল ইসলাম (৩৫) নামে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে ঐ ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে তিন বছর ধরে যৌন হয়রানি করছিলেন। গত বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানাধীন কুয়াইশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব-৭। গ্রেফতার হওয়া শিক্ষক ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল ও যৌন হয়রানির কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন র্যাবের কর্মকর্তারা।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) রাতে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) আনোয়ার হোসেন ভূঞা।
গ্রেফতারকৃত ওই শিক্ষক পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি থানার মুসলিম ব্লক এলাকার মো. ফয়জুল হকের ছেলে বলে জানা গেছে।
র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) আনোয়ার হোসেন ভূঞা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গত ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রাম শহরের নিউরন ইংলিশ স্কুলের সাবেক ঐ শিক্ষক ১২ বৎসর বয়সী এক ছাত্রীর বাথরুমের কিছু অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে মেয়েটিকে দেখিয়েছিল। পরবর্তীতে ওই ছাত্রীর অশ্লীল ভিডিওটি তার বন্ধু-বান্ধবীকে পাঠিয়ে দেয়া এবং ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেয়ার হুমকি দিয়ে প্রায় তিন বৎসর যাবত মেয়েটিকে ব্ল্যাকমেইল করে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল। একপর্যায়ে মেয়েটিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ইমু, ম্যাসেঞ্জার এবং হোয়াটসআ্যাপে তার অশ্লীল ছবি পাঠাতে বাধ্য করে ঐ শিক্ষক।
তিনি আরও জানান, দীর্ঘ প্রায় ৩ বৎসর যাবত ঐ শিক্ষকের ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে শিশু মেয়েটি (ছাত্রী) মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ওই ছাত্রী আর উপায়ন্তু না দেখে বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যদের জানায়। পরবর্তীতে তার (ছাত্রী) পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনাটি র্যাবকে অবহিত করে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি চৌকস আভিযানিক দল গোপনে সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় যৌন নীপিড়নকারী শিক্ষক আয়াতুল ইসলামকে হাটহাজারী থানাধীন কুয়াইশ এলাকায় থেকে গ্রেফতার করে।
এদিকে, গ্রেফতারকৃত শিক্ষক আয়াতুল ইসলাম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবের কাছে নাবালিকা শিশু ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন করার কথা অকপটে স্বীকার করেছে। এছাড়া গ্রেফতার হওয়া শিক্ষকের মোবাইল ফোন থেকে মেয়েটির শতাধিক অশ্লীল ছবি উদ্ধার করা হয়েছে। তার ফেসবুকে ও ম্যাসেঞ্জারে শিশু ছাত্রীর কুরুচিপূর্ণ অনেক অশ্লীল ছবির সত্যতা মিলেছে। শিক্ষকের মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, গ্রেফতারকৃত যৌন নিপিড়নকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে হাটহাজারী মডেল থানায় একটি পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইনে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজিব শর্মা। শনিবার ঐ শিক্ষককে আদালতে সোর্পদ করা হবে বলেও জানান তিনি।