ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার ৬টি কলেজ, ২২টি মাদ্রাসা ও ৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২২ হাজার ৭২৪ জন শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছে। গতকাল শনিবার শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার শেষ দিন প্রতিটি কেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড় ছিল। তবে জন্মনিবন্ধন জটিলতায় বহু শিক্ষার্থী টিকা নিতে পারেনি বলে দাবি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের।
কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের অভিযোগ, টিকা গ্রহণের শেষ দিনে ১২ বছর হতে দু-এক দিন বাকি, এমন শিক্ষার্থীদেরও টিকা দেওয়া হয়নি।
সরেজমিন জানা গেছে, শনিবার শেষ দিনে টিকা নিতে আসে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। তারা হৈচৈ শুরু করলে সামাল দিতে হিমশিম খান দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা। কিছু স্বেচ্ছাসেবীও বিশৃঙ্খলা সামাল দিতে হ্যান্ডমাইকে প্রচার চালান।
টিকাদানকারী সুপারভাইজার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) মোহাম্মদ উল্যার দাবি, শনিবার সারাদিনে টিকা নিয়েছে ২ হাজার ৭৬২ জন।
ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডিজিস কন্টোল (এমওডিসি) ইমাম হোসেন জানান, সব শিক্ষার্থীকে তারা টিকার আওতায় আনতে পারেননি। গত ৫ জানুয়ারি থেকে শিক্ষার্থীদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাকক্ষে টিকাদান শুরু হয়। উপজেলায় সব মিলে শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে, যাদের বয়স ১২ বছর বা তার বেশি। গত ১০ দিনের মধ্যে দুটি শুক্রবার ছাড়া ৮ দিনে প্রতিদিন ৩ হাজার ৭৫০ জন করে শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার কথা। প্রতিদিন ১১ জন নার্স ও ভেকসিনেটর শিক্ষার্থীদের টিকা দিলে প্রত্যেকে ৩৪১ জনকে টিকা দিচ্ছেন বলে পরিসংখ্যান বলে। প্রতিদিন উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে ৪ হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে ২ হাজার অভিভাবক এসে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রুবাইয়াত বিন করিমের দাবি, অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা ও সংকট ছাড়াই প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিরবচ্ছিন্ন টিকাদান করা হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী বাদ পড়েনি। তবে তার কথার ঠিক উল্টো কথা বলেন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা।
ইউনাইটেড ট্রাস্ট পরিচালিত নিজকুঞ্জরা কেজি আদর্শ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়ের উদ্দিন আলমগীর জানান, তার বিদ্যালয়ে ১২ বছরের শিক্ষার্থী রয়েছে ৮৬ জন। টিকা নিয়েছেন ৭১ জন। জন্মনিবন্ধন জটিলতায় বাকি ১৫ জন টিকা নিতে পারেনি।
মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল মতিন জানান, তার কলেজে বাদ গেছে ২৫ জনের মতো। জন্মনিবন্ধন জটিলতায় টিকা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
ছাগলনাইয়া সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খলিলুর রহমান জানান, গত বৃহস্পতিবার জানানো হয় সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। তড়িঘড়ি জানানোয় শনিবার শেষ দিনে সরকারি কলেজের ২৫০ জন শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছে মাত্র। বাকি ৩৫০ জন শিক্ষার্থী টিকার বাইরে।