ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গেরুয়া বাজারে চলমান এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এ সময় স্থানীয়দের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের চারটি মোটরসাইকেল ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বেশকিছু দোকান ভাংচুর করার অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হলেও আহত অন্য শিক্ষার্থীদের স্থানীয়রা আটকে রেখেছেন বলে জানান উদ্ধার হওয়া শিক্ষার্থীরা।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে আশেপাশের বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় উভয় পক্ষের সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বেশকিছু দোকান ভাংচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছোড়া হলেও তা উপেক্ষা করে বারবার সংঘর্ষ হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসক মাহবুব বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ৪০-৪৫ জন শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের অধিকাংশেরই মাথা, হাত, পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনকে সাভারের এনাম মেডিকেল হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘শুনেছি গেরুয়া বাজারে মেসে থাকা আমাদের অনেক শিক্ষার্থীর বাসায় স্থানীয়রা তল্লাশি চালাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসের বাইরের শিক্ষার্থীর দায়িত্ব আমি নেব না।’
পাতালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান বলেন, ‘গেরুয়ায় ক্যাম্পাসের ছেলেরা স্থানীয় দোকানদারের কাছে চাঁদা চাইলে তারা শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়। সন্ধ্যার পর থেকেই উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত স্থানীয়দের কতজন হতাহত হয়েছে তা জানি না। তবে পুলিশ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।’
সাভার থানার ওসি (তদন্ত) এফ এম সাঈদ বলেন, আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।
কিন্তু বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী গেরুয়াতে বাসা বাড়া নিয়ে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে সেসব বাসায় যাওয়া অনিরাপদ। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেওয়ার দাবি জানান তারা। কোনো কোনো ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করার কথাও জানান।
আশুলিয়া থানার ওসি কামরুজ্জামান বলেন, আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করার চেষ্টা করছি। কিন্তু তা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এখনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নয়।