নওগাঁর মহাদেবপুরের পাহাড়পুর জিতেন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক বিপ্লব কুমার মণ্ডল জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদে ১২ বছর চাকরি করেছে। কিন্তু সম্প্রতি তার সনদটি যাচাই করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) তা জাল বলে প্রমাণ পেয়েছে। বিপ্লব কুমার মণ্ডল জাল সনদটি নিয়ে ১১ বছরের বেশি সময় শিক্ষকতা ও প্রায় ১০ বছর এমপিও ভোগ করেছেন।
শিক্ষক বিপ্লব কুমার মণ্ডলের সনদটি জাল বলে সম্প্রতি প্রধান শিক্ষককে যাচাই প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন এনটিআরসিএ এর সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম।
এর আগে গত ২৪ মে এনটিআরসিএ শিক্ষক বিপ্লব কুমার মন্ডলের নিয়োগকালীন সব কাগজপত্রসহ তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের কপি চেয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলো।
দৈনিক শিক্ষা ডটকমের হাতে থাকা কাগজপত্রের আলোকে জানা যায়, গত ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ২২ আগস্ট পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিপ্লব কুমার মণ্ডল ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে বিজ্ঞান বিষয়ের (উদ্ভিদ বিদ্যা) পাস করা একটি শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ নভেম্বর নিয়োগ পান। তার সনদের নিবন্ধন নং ৭০০০২৫৮/২০০৭, এ নিবন্ধন পরীক্ষায় তার রোল নম্বর ১১১৫০৫৫০ এবং পরীক্ষার ফল প্রকাশের তারিখ ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ ডিসেম্বর। নিয়োগের পর শিক্ষক বিপ্লব কুমার মন্ডল বিদ্যালয়ে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ ডিসেম্বর যোগদান করেন এবং তার নিয়োগকালীন নিবন্ধন সনদ দিয়েই ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ১ নভেম্বর এমপিওভুক্ত হন। এপর্যন্ত সে সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় ১৭ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন।
এনটিআরসিএ থেকে গত ২৭ জুলাই পাঠানো যাচাই প্রতিবেদনে জানা যায়, তিনি যে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে চাকরি নিয়েছেন এ সনদটি অন্য ব্যক্তির বিপ্লব কুমার মন্ডলের নয়। প্রকৃত সনদধারীর নাম খোরশেদা আক্তার, বিষয় প্রাণীবিদ্যা। শিক্ষক বিপ্লব কুমার মণ্ডল জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন মর্মে দালিলিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে জাল ও ভুয়া সনদধারীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে থানায় মামলা দায়ের করতে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে বলেছে এনটিআরসিএ
স্থানীয় কয়েকটি সূত্র জানায়, বিপ্লব কুমার মণ্ডল নিয়োগ বোর্ড গঠন ও যোগদানের ১ বছর পর ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেন। এনটিসিআরএ থেকে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ যাচাইয়ের নির্দেশ দিলে তিনি যে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে চাকরি নিয়েছেন সেই সনদের তথ্য যাচাইয়ের জন্য না পাঠিয়ে নিয়োগের ১ বছর পরে পাস করা শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি যাচাইয়ের জন্য পাঠিয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে জানতে বিপ্লব কুমার মণ্ডলের মুঠোফোনে দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মায়া রানী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, 'আমি অসুস্থ আমি কথা বলতে পারবো না।'