জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত - দৈনিকশিক্ষা

জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের 'বীরউত্তম' খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধে অবদানের এ খেতাব প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার সকল রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধাও থাকবে না। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর স্কাউট ভবনে কাউন্সিলের দিনব্যাপী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর চার খুনির বীরবিক্রম ও বীরপ্রতীক খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন বিধি অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে জামুকা। এর পর মন্ত্রণালয় গেজেট আকারে প্রকাশ করবে। খেতাব বাতিলের পাশাপাশি তাদের রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ-সুবিধাও বাতিল করা হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আরেক মদদদাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমদের নাম রাষ্ট্রের 'স্মরণীয়-বরণীয়' তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সভায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আরও যেসব মদদদাতা রয়েছেন, তাদের চিহ্নিত করতে তিন সদস্যের একটি কমিটিও করা হয়েছে।
কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে চট্টগ্রাম-১ আসনের সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে। অন্য দুই সদস্য হলেন সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ও উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ।

সভাসূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের খেতাব বাতিলের বিষয়টি সভার আলোচ্যসূচিতে না থাকলেও ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধার সনদ যাচাই-বাছাই ও বাতিল-সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার সময় বিষয়টি উত্থাপিত হয়। তখন এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর জিয়াউর রহমানের খেতাব ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় জামুকা। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর খুনি ক্যাপ্টেন নূর চৌধুরী ও মেজর শরিফুল হক ডালিমের বীরবিক্রম খেতাব এবং রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিন খানের বীরপ্রতীক খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

এর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাে র ৪৫ বছর পর তাদের মুক্তিযুদ্ধের খেতাব বাতিল হচ্ছে। চার খুনি বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন। তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে সরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবগঠিত কমিটি ও জামুকার সদস্য শাজাহান খান বলেন, 'সভায় বঙ্গবন্ধুর চার খুনি ও জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাবসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাতিলের বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সেগুলো আলোচনার ভিত্তিতে রেজুলেশন না হওয়া পর্যন্ত বলা সমীচীন নয়।'

কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, 'আমরা শিগগিরই কাজ শুরু করব। তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে কমিটির সুপারিশ জামুকায় দাখিল করা হবে।'

জামুকার এ সভায় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শাজাহান খান, উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ, মো. মোতাহার হোসেন, মো. শহীদুজ্জামান সরকার এবং যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রশিদুল আলম ও মেজর (অব.) ওয়াকার হাসান বীরপ্রতীক। পদাধিকার বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জামুকার প্রধান উপদেষ্টা।

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের খেতাব বাতিল এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকাে র মদদদাতাদের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠনের দাবি গত কয়েক বছর ধরেই আলোচনা হচ্ছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও বিভিন্ন সময় এ নিয়ে কমিশন গঠনের কথা বলেছিলেন।

কমিশন গঠন না হলেও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মদদদাতাদের চিহ্নিত করতে জামুকা থেকে কমিটি গঠনের বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, 'দীর্ঘকাল থেকেই আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাে র নেপথ্য নায়কদের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠনের জন্য বলে আসছি। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়েও কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছিল; কিন্তু গঠন করা হয়নি। এখন যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এটি অত্যন্ত ইতিবাচক।'

শাহরিয়ার কবির বলেন, 'হত্যাকারী- হত্যাকারীই। তাদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়া যায় না। এখানে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যদি তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়া হয়, তাহলে সেটি অন্য খেতাবপ্রাপ্তদের জন্য লজ্জাজনক।'

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের খেতাব বাতিল হলেও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেন শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কখনও বদলানো যায় না। বিকৃত করা যাবে না। ইতিহাসের যার যা ভূমিকা তা লিপিবদ্ধ রাখতে হবে। যেমনটি জিয়াউর রহমানের ক্ষেত্রে তিনি মুক্তিযুদ্ধে জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন, এটি সত্য। বীরউত্তম খেতাবও পেয়েছিলেন। একইভাবে খন্দকার মোশতাক আহমদ, যিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাে র পর রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন। অথচ তখন তার ভূমিকা ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের বিরুদ্ধে, যেটি ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে উঠে এসেছে।'

সূত্র: দৈনিক যুগান্তর। 

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035150051116943