সিলেট জুড়ে টানা বর্ষণে সিলেটে ভায়বহ বন্যা দেখা দিয়েছে। জেলার একের পর এক নিচু এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বেড়েছে জনদুর্ভোগ। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পাঠদান বন্ধ রয়েছে। কোম্পানীগঞ্জে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। সিলেটের সাথে কানাইঘাট ও গোয়াইনঘাটের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তবে, জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমলেও সুরমা ডাইকের গৌরিপুর-কুওরঘড়ি এলাকায় ৬টি ভাঙন কবলিত পয়েন্ট দিয়ে তীব্র গতিতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় কাঁচা বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এখনও উপজেলার বেশির ভাগ ইউনিয়নের বিপুল সংখ্যক বাড়িঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। মাঠ ও গোচারণ ভূমিতে পানি উঠায় গো-খাদ্য সংকটসহ মৎস্য খামারিরাও রয়েছেন চরম শঙ্কায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সুরমার পানি সিলেটের কানাইঘাটে বিপৎসীমার ১২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া, একই সময়ে কুশিয়ারার পানি অমলশীদে বিপদসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং সারি-গোয়াইন নদীর পানি সারিঘাটে বিপদসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টির সঙ্গে যোগ হয়েছে উজান থেকে নেমে আসা ঢল। ভারতের মেঘালয়, ত্রিপুরা ও আসাম প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে দেশের প্রধান নদনদী গুলোর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সিলেটে বৃষ্টিপাত অনেকটা কমে এসেছে। ১৮ মে পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, ২০ ও ২১ মে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। শনিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৬২ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
দৈনিক শিক্ষার নিজস্ব সংবাদ বিশ্লেষক ও সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার চরিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মুজাম্মিল আলী জানান, বন্যায় জেলার বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ আছে। আমার নিজের প্রতিষ্ঠানও বন্ধ। আগামী সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু করতে পারবো কী-না জানি না।
তিনি আরও জানান, আমি নিজেও পানিবন্দি ছিলাম। বন্যার কারণে নিজ বাড়ি ফেলে উপজেলা সদরে এসে উঠেছি।