সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় অংশের শিক্ষার্থী করোনার টিকার আওতায় এলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছেন। সব শিক্ষার্থী টিকার আওতায় আনতে ডিসেম্বর পর্যন্ত লেগে যাবে বলে মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে সব শিক্ষার্থী টিকার আওতায় না এলেও কলেজগুলো খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সব বর্ষের ক্লাস এক সঙ্গে না খুলে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনটি লিখেছেন নিজামুল হক।
প্রতিবেদনে আরও দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি বড় অংশের শিক্ষার্থী করোনা ভাইরাসের টিকার আওতায় এসেছেন। এক ডোজ টিকা নেওয়া শিক্ষার্থীর হার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। ইতিমধ্যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলও খুলে দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় খুলে যাবে এমনটা জানানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে। এর আগে দ্রুততার সঙ্গে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকাগ্রহণ কার্যক্রম চলছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে চার দিনে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ২ হাজার ৭৭৮ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারী। সুরক্ষা অ্যাপে ডাটা গ্রহণ সাপেক্ষে দেশের যে কোনো প্রান্তে নিবন্ধন করা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই ক্যাম্প থেকে ভ্যাকসিন নিতে পারছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮২ ভাগ শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছেন। ২১ অক্টোবর থেকে ক্যাম্পাসে গিয়েই শিক্ষার্থীরা টিকা দিতে পারবেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শনিবার ক্যাম্পাসে গিয়ে টিকা দিতে পারবেন। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খুলেছে ১ অক্টোবর। নিম্নে ১ ডোজ টিকা দিয়েছে এমন সব শিক্ষার্থী হলে উঠতে পেরেছেন। প্রায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী টিকার আওতায় আসছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে ১৮ অক্টোবর। টিকার সনদ দেখিয়েই হলে উঠতে হবে শিক্ষার্থীদের।
এছাড়া ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বর্তমানে ৯৯টির শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৭৪ হাজার। ৭০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের এক লাখ ২৯ হাজার ৬৯৯ জন শিক্ষার্থী জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। জাতীয় পরিচয়পত্র নেই এমন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩২ হাজার ৮৩৮ জন ইউজিসির ওয়েব লিংক ‘ইউনিভ্যাক’-এ রেজিস্ট্রেশন করেছেন। সব মিলিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ঢাকার ৭টি কলেজের আড়াই লাখ শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার জন্য ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ ও সরকারি বাঙলা কলেজে তিনটি অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র চালু হচ্ছে। সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীরা টিকা গ্রহণ করতে পারবেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজগুলোতে ৩০ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। কত শিক্ষার্থী টিকার আওতায় এসেছে তার প্রকৃত তথ্যও নেই বিশ্ববিদ্যালয়টির কাছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, টিকা নিয়েছে খুব কম সংখ্যক শিক্ষার্থীই।
বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮ লাখ শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র আছে। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে তাদের সুরক্ষা অ্যাপে গিয়ে নিবন্ধন করা ও টিকা নেওয়ার জন্য জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তাদের জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে সুরক্ষা অ্যাপে গিয়ে নিবন্ধনের জন্য বলা হয়েছে। তবে কত সংখ্যক শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছে সে বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য আমাদের কাছে নেই। সরকার ১০ কোটি ভ্যাকসিন ডিসেম্বরের মধ্যে পাবে। যেসব শিক্ষার্থী নিবন্ধন করে রাখবেন তারা ঐ সময় সবাই টিকা পাবে। কিছুটা সময়তো লাগবেই।