রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের কাছে গত ২৪ বছরে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার পৌরকর বকেয়া রয়েছে বলে দাবি করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। তবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অভিযোগ, হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ সিটি করপোরেশনের এই পাওনা দাবি অযৌক্তিক। গতকাল বুধবার দুপুরে ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামানের হাতে বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্সের অংশ হিসাবে ১০ লাখ টাকার চেক তুলে দেওয়ার সময় সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘গণস্বাস্থ্য একটা দাতব্য প্রতিষ্ঠান। মানুষের দানের টাকায় কেনা হয় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। তা ছাড়া ঢাকা শহরের মধ্যে সবচেয়ে কম টাকায় এই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এমনকি সরকারি হাসপাতালের চেয়েও কম টাকায় রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাই আমাদের দাবি ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য সরকারি হাসপাতালগুলো থেকে সরকার যে হারে ট্যাক্স নেয় আমাদের কাছ থেকেও যেন সে হারে ট্যাক্স নেওয়া হয়। সরকারি হাসপাতালের মতো ট্যাক্স নির্ধারণ করলে আমরা ১৫ দিন থেকে এক মাসের মধ্যে বকেয়া ট্যাক্স পরিশোধ করে দেব।’
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এমন বক্তব্যের জবাবে ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বকেয়া রাজস্ব আদায়ের জন্য মেয়রের নির্দেশে আমরা হাসপাতালে এসেছি। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেছি। ট্যাক্স বকেয়া থাকার কথা বলেছি। জাফরুল্লাহ সাহেব ট্যাক্স কমানোর কথা বলেছেন। জবাবে আমরা তাকে মেয়রের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছি। আমার সঙ্গে রাজস্ব কর্মকর্তা ও স্থানীয় কাউন্সিলর উপস্থিত আছেন।’
ডিএসসিসির রাজস্ব কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, ধানমনি্ডর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল আগে দোতলা ভবন ছিল। পরবর্তীকালে সেটি ৭ তলা, এরপর ১০ তলা করা হয়েছে। কিন্তু পুরনো হারে ট্যাক্স দিয়ে আসছে গণস্বাস্থ্য। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গণমাধ্যমবিষয়ক উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু এবং স্থানীয় ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বাবুল।
এদিকে পৌরকর আদায়ে গণস্বাস্থ্যে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানোয় ক্ষুব্ধ জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘গত দুই বছর আগে আমি মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলাম। ট্যাক্স কম ধরার বিষয়ে মেয়র আমাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর আর এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সিটি করপোরেশন।’
ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানোর আগে সিটি করপোরেশন থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এক মাস আগে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু পৌরকরের বিষয়ে ফয়সালা না করায় আমি পদক্ষেপ নেইনি। তবে মেয়রের সঙ্গে শিগগিরই আমি আবার সাক্ষাৎ করব। বিষয়টার একটা ফয়সালা করব।’