ডাবল চাকরি করেন এমপিওভুক্ত কানু কুমার - দৈনিকশিক্ষা

ডাবল চাকরি করেন এমপিওভুক্ত কানু কুমার

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

২৭ বছর ধরে দুইটি চাকরিতে সরকারি দুইটি খাত থেকে বেতন-ভাতা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউপি সচিব কানু কুমার নাথের বিরুদ্ধে।

কানু কুমার নাথ মির্জাপুর ইউপি সচিব হিসেবে সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা নেওয়ার পাশাপাশি ফটিকছড়ির হেয়াকোঁ বনানী ডিগ্রি কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবেও সরকারি বেতন-ভাতা নিচ্ছিলেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন- একাধিক চাকরি করে সরকারি দুইটি খাত থেকে বেতন-ভাতা গ্রহণ করা দুর্নীতির শামিল। তথ্য গোপন করে এই কাজ করায় কানু কুমার নাথের বিরুদ্ধে আইন অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

জানা গেছে, ১৯৯১ সালের ১ এপ্রিল হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউপি সচিব হিসেবে যোগ দেন মিরসরাইয়ের বাসিন্দা কানু কুমার নাথ। এরপর থেকে ইউপি সচিব হিসেবে সরকারি কোষাগারের বেতন-ভাতা নিচ্ছেন তিনি।

তবে ইউপি সচিব হিসেবে সরকারি চাকরি করার তথ্য গোপন করে ১৯৯৪ সালের ৮ মে ফটিকছড়ির হেয়াকোঁ বনানী ডিগ্রি কলেজে বাংলার প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন কানু কুমার নাথ।

২৭ বছর ধরে দুইটি চাকরিতে সরকারি দুইটি খাত থেকে বেতন-ভাতা গ্রহণের অভিযোগ কানু কুমার নাথের বিরুদ্ধে

কলেজটি এমপিওভুক্ত হওয়ায় কানু কুমার নাথও এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা নেওয়া শুরু করেন। এখন এই কলেজের এমপিওভুক্ত সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা নিচ্ছেন তিনি।

২৭ বছর ধরে কানু কুমার নাথ দুইটি চাকরিতে সরকারি দুইটি খাত থেকে বেতন-ভাতা গ্রহণ করলেও বিষয়টি জানাজানি হয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন এই তথ্য উদঘাটন করেন।

মো. রুহুল আমিন জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারি মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদ পরিদর্শনে গিয়ে দেখতে পাই জন্মনিবন্ধন সনদ সহ ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সনদে সচিবের স্বাক্ষর করছেন একজন ক্যাজুয়াল স্টাফ।

তিনি বলেন, মো. বেলাল নামে ওই স্টাফকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারি- ১২ বছর ধরেই জন্মনিবন্ধন সনদ সহ ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সনদে সচিবের স্বাক্ষর করছেন তিনি। ইউপি সচিব ইউনিয়ন পরিষদে আসেন না। অন্য চাকরি করেন।

রুহুল আমিন বলেন, পরে ইউপি সচিবের খোঁজ নিয়ে জানতে পারি- তিনি ফটিকছড়ির হেয়াকোঁ বনানী ডিগ্রি কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে ২৭ বছর ধরে চাকরি করছেন। তিনি দুইটি চাকরি করে সরকারি দুইটি খাত থেকে বেতন-ভাতা গ্রহণ করছেন।

ইউএনও বলেন, ইউপি সচিব হিসেবে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করা, একই ব্যক্তি হয়ে দুইটি পদে কর্মরত থেকে দুইটি স্থান থেকে সরকারি বেতন-ভাতা গ্রহণের বিষয়টি জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। এ বিষয়ে তারা ব্যবস্থা নেবেন।

জানতে চাইলে হেঁয়াকো বনানী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ফারুকুর রহমান জানান, কানু কুমার নাথ ধূর্ত প্রকৃতির লোক। তিনি ইউপি সচিব হিসেবে সরকারি দায়িত্ব পালনের কথা আমাদের কাছে গোপন করেছেন। দুইটি ভিন্ন উপজেলা হওয়ায় আমরাও বিষয়টি জানতাম না।

তিনি বলেন, হাটহাজারীর ইউএনও সাহেবের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে কানু কুমার নাথকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ৩ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে। অপরাধ আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানাবো।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. বদিউল আলম জানান, আইন অনুযায়ী একজন ব্যক্তি দুইটি ভিন্ন চাকরিতে সরকারি দুইটি খাত থেকে বেতন-ভাতা গ্রহণ করতে পারেন না। ইউপি সচিব হিসেবে গ্রহণ করা বেতন-ভাতা ফেরত নেওয়ার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হবে।

কানু কুমার নাথের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানও। তিনি জানান, এটি হতে পারে না। আমরা অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে কানু কুমার নাথের মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040731430053711