ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২৬ মার্চের মধ্যে বাতিল না করলে সারাদেশে সরকার পতনের আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে শ্রমিক অধিকার পরিষদ। আইনটি বাতিল না হলে জাতীয় সংসদ ঘেরাও করা হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘোষণা দেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। শ্রমিক নেতা রুহুল আমিনসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার সবার নিঃশর্ত মুক্তি ও এই আইন বাতিলের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এদিকে, পৃথক সমাবেশে এই আইন বাতিল এবং গ্রেপ্তারদের মুক্তির জন্য ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো। এ সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকিও দেন সংগঠনগুলোর নেতারা।
সমাবেশে নুর বলেন, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন বেগবান হয়েছিল ছাত্র-জনতার আপসহীন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। মুশতাকের রক্তও বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। তার রক্তে এ সরকারের পতন হবে।
শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান, যুগ্ম আহবায়ক ফারুক হাসান, মশিউর রহমান, মাহফুজুর রহমান খান, যুব অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক হোসেন, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ভূঁঁইয়া, শ্রমিক অধিকার পরিষদের নেতা আরমান হোসেন প্রমুখ।
'লুটেরা নিরাপত্তা আইন' : জাতীয় জাদুঘরের সামনে 'প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহে'র ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হলো লুটেরা নিরাপত্তা আইন। কারণ এই আইনে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারী ও দুস্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। এ জন্য অবিলম্বে এই কালো আইন বাতিল করতে হবে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানার সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিম উদ্দীন খান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসিরুদ্দিন প্রিন্স, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল, নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন, আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা লিপি প্রমুখ।
অধ্যাপক তানজিম বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আসল চরিত্র হলো এটি মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চায়। কিন্তু সবার মুখের ভাষা নয়, যাদের মুখের ভাষা তির্যক, যারা এই রাষ্ট্রকে, সমাজকে পথ দেখাতে চায়, যারা সৃষ্টিশীল মানুষ, তাদের মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চায়।
মুশতাকের মৃত্যুর তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে তিনি বলেন, তার মৃত্যুর পর বলা হয় এটা স্বাভাবিক মৃত্যু। তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশের আগে সরকারের উচ্চ মহল থেকে যখন এ ধরনের বক্তব্য আসে, সেক্ষেত্রে তদন্ত রিপোর্ট এমনিতেই বাতিল হয়ে যায়। কার্টুনিস্ট কিশোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি তার ওপর কী ধরনের নির্যাতন করা হয়েছে। তার পুরুষাঙ্গে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছে, যা কেবল পাকিস্তান আমলেই কল্পনা করা যেত।
সমাবেশ শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এসে শেষ হয়।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।