দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এদিকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) নির্মাণাধীন দুটি ভবনের বেজমেন্টসহ বিভিন্ন তলায় জমে থাকা পানি মশক প্রজননের শঙ্কা বাড়াচ্ছে। ফলে বাড়ছে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ লুৎফর রহমান ও সায়েরা খাতুন নামে দুটি হল নির্মাণ করা হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণাধীন হল দুটি এডিস মশার হটস্পটে পরিণত হয়েছে। সায়েরা খাতুন হলের মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গায় বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। লুৎফর রহমান হলের ব্যবহৃত নির্মাণসামগ্রী স্তূপাকারে বাইরে ছড়িয়ে রয়েছে। যেখানে জমে রয়েছে বৃষ্টির পানি। এ ছাড়া নির্মাণাধীন হল দুটির বেজমেন্ট ও বিভিন্ন তলায় পানি জমে থাকতে দেখা যায়, যা এডিস মশা জন্মানোর জন্য আদর্শ জায়গা। কেননা, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে, ৬৫ শতাংশ নির্মাণাধীন ভবনেই এডিস মশার লার্ভা ও মশার বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া গেছে।
ক্যাম্পাসে বসবাসকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, মশকনিধনের জন্য নিয়মিত ওষুধ ছিটানো হয় না। ফলে বাড়ছে মশার উপদ্রব। কয়েল জ্বালিয়েও নিস্তার মেলে না। আবার নির্মাণাধীন ভবনগুলোয় জমে থাকা পানি ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
নির্মাণাধীন সায়রা খাতুন হল সংলগ্ন একটি বাড়ির বাসিন্দা রোকসানা বেগম জানান, তীব্র গরমের মধ্যেও তিনি বাড়ির সব দরজা-জানালা বন্ধ রাখেন। কারণ একটাই, মশা। নিজ পরিবারকে এডিস মশার কামড় থেকে বাঁচাতে তিনি সব দিকে সতর্ক হলেও মশার উপদ্রব ঠেকাতে পারছেন না।
লুৎফর রহমান হলের পাশেই বসবাসকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি ডেঙ্গুর অবস্থা দেখে টবের গাছগুলো আর রাখিনি। কোথাও পানি জমতে দিচ্ছি না। যতটা পরিষ্কার থাকা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও বাসার আশপাশ পরিষ্কার করে দিয়েছে। কিন্তু নির্মাণাধীন হলগুলোর যেখানে-সেখানে পানি জমে আছে। এতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘এডিস মশার বংশবিস্তারের ক্ষেত্রে নির্মাণাধীন ভবন অন্যতম মাধ্যম। ভবনে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা ডিম দিতে পারে। এতে কয়েক দিনের মাথায় ডিম থেকে লার্ভা বেরিয়ে আসে। ফলে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া না হলে পরবর্তী সময়ে মশার উপদ্রব আরও ভয়াবহ হতে পারে।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. ফরহাদ হোসেন বলেন, ব্যাপারটি নিয়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে কথা বলব। তা ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মশকনিধনের জন্য পরিষ্কার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এরপর পুরো ক্যাম্পাসে ওষুধ ছিটানো হবে।