কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দহকুলা সরদার গাড়া মাঠের একটি ডোবা থেকে জীবন আলী (১৮) নামের এক স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মাদকাসক্ত বন্ধুরা তাকে হত্যা করে পানিতে ফেলে রেখেছিল বলে অভিযোগ পরিবারের।
পুলিশ ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার বেলা সড়ে ১১টায় সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামের সরদারগাড়া মাঠের মধ্যে একটি বাগান সংলগ্ন ডোবার পানি থেকে জীবনের লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
নিহত কিশোর জীবন আলী স্থানীয় বাসিন্দা টলি চালক শুকুর আলীর ছেলে এবং স্থানীয় মোহাম্মদশাহী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি-২০২২ এর পরীক্ষার্থী।
নিহতের মা যমুনা খাতুন (৪২) বলেন, গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর জীবন মোটরসাইকেল নিয়ে একটু পরেই ঘুরে আসছি বলে বাড়ি থেকে বের হয়। রাতে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। রাতে আশপাশে সম্ভাব্য জায়গায় খোঁজ করেও জীবনের কোনো সন্ধান পাইনি।
‘বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সরদারগাড়া মাঠে জীবনের মোটরসাইকেল পড়ে আছে বলে লোকমুখে শুনতে পাই। সেখানেই ডোবার পানিতে ডুবে থাকা জীবনের লাশ পাওয়া যায়। জীবনের কপালে আঘাতের চিহ্ন আছে, ঘার মটকানো আছে, আমার ছেলেকে কেউ মেরে পানিতে ডুবিয়ে রেখেছে। আমি এর বিচার চাই।’
নিহতের মামা রুহুল আমীনের অভিযোগ, ‘বেশ কিছুদিন ধরে শুনছিলাম, জীবন কিছু সংখ্যক মাদকসেবী কিশোরদের সঙ্গে মেলামেশা করছিল, জানামতে, এমনিতেই ওর কোন শত্রু ছিল না। জীবনকে যেখানে হত্যা করা হয়েছে, সেখানে চেইন ছেঁড়া একটি হাতঘড়ি এবং এক জোড়া স্যান্ডেল পাওয়া গেছে যা জীবনের না। ওরা জীবনের মোটরসাইকেল না নিয়ে ফেলে রেখে গিয়েছে তবে, জীবনের মোবাইল ফোনটা নিয়ে গেছে। সঠিক তদন্ত করলেই হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসবে।’
লাশের সুরতহাল প্রস্তুতকারী কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক মুজিবর রহমান জানান, ‘নিহতের কপালে ভারী কিছু দিয়ে আঘাতজনিত কালশিরা দাগ, এবং ঘাড় ভাঙা ছিল, এতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তবে ঠিক কীভাবে এবং কে বা করা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে এবং মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ও লাশের ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা ডা. আশরাফুল আলম জানান, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, এটি একটি হত্যাকাণ্ড, নিহতের শরীরের মধ্যে প্রচুর রক্তক্ষরণ ছিল, তবে ঠিক কীভাবে হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে তা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলেই বোঝা যাবে।’