ঢাবিতে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে ভর্তি পরীক্ষা, ফল নিয়ে উদ্বেগ - দৈনিকশিক্ষা

ঢাবিতে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে ভর্তি পরীক্ষা, ফল নিয়ে উদ্বেগ

ঢাবি প্রতিনিধি |

করোনার কারণে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। যে কারণে বিভিন্ন মহল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেওয়ার দাবি ওঠে। শিক্ষামন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনও (ইউজিসি) এ দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে। তবে দাবি উপেক্ষা করে ঢাবিতে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি পরীক্ষা পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের দাবি, পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে প্রশ্ন হওয়ায় তাদের পরীক্ষা আশানুরূপ হয়নি। এতে ফল নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন তারা।

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনার কারণে দীর্ঘদিন দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এ সময় দেশের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় অটোপাসের মাধ্যমে কয়েকটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে। তবে এইচএসসি ও সমমান শিক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এসব সিলেবাসে পরীক্ষা দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাও একই সিলেবাসে হওয়ার দাবি তোলে। এ নিয়ে কয়েক দফায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে মিটিং করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ও ইউজিসি। দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করার পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। যদিও গুচ্ছভর্তি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে চার ইউনিটে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস থেকে প্রশ্ন প্রণয়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান ইউনিটে ৫ থেকে ৭টি প্রশ্ন, ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ৬ থেকে ৭টি প্রশ্ন সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের বাইরে থেকে এসেছে। এ ছাড়া কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।

শিক্ষার্থীদের দাবি, মহামারি কারোনার কারণে শিক্ষার্থীরা এইচএসসি পরীক্ষার জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিতে পারেনি। যে কারণে তাদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষার পর ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য শিক্ষার্থীরা চার মাসের মতো সময় পেয়েছে। করোনা প্রকোপের কারণে যে সিলেবাস দুই বছরে শেষ করা সম্ভব হয়নি, সেই সিলেবাস চার মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীদের জন্য দুঃসাধ্য কাজ হয়ে দাঁড়ায়। তার পরও চাপে পড়ে অনেক শিক্ষার্থী সেই সিলেবাস শেষ করতে চেষ্টা করেছে। তবে অধিকাংশের পক্ষে সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী প্রত্যয় সরকার বলেন, বিজ্ঞান ইউনিটের কিছু প্রশ্ন সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের বাইরে থেকে হয়েছে। এবারের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ভর্তি পরীক্ষা নিতে। আমরাও ভেবেছিলাম সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হবে। কিন্তু পরীক্ষার প্রশ্ন দেখার পর অনেক প্রশ্ন বুঝতে সমস্যা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ভর্তি পরীক্ষা হলে আমাদের জন্য সহজ হতো।

কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী শাহ এমডি ফাহাদ বলেন, আমাদের অনেক প্রশ্ন সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের বাইরে থেকে আসছে। যেহেতু করোনার কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছি, তাই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা হলে আমাদের জন্য ভালো হতো। 

ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে অনেক প্রশ্ন কঠিন ছিল। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের বাইরে পরীক্ষা হওয়ার কারণে আমাদের জন্য অতিরিক্ত চাপ হয়ে গিয়েছে।

এদিকে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টিকে অমানবিক আখ্যা দিয়েছেন ঢাবি শিক্ষকদের একাংশ। তাদের ভাষ্য, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হলেও ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় বড় একটি সিলেবাস শিক্ষার্থীদের ওপর জোড় করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘবের বিষয়টি আমলে নিয়ে তাদের এ বিষয়ে আরও মানবিক হওয়ার প্রয়োজন ছিল। এ ছাড়া ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে দেশের কয়েকটি কোচিং সেন্টারের যোগসাজশের অভিযোগও করেছেন তারা।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাবির এক শিক্ষক বলেন, পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের বিষয়ে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবেন—এটাই প্রত্যাশা।

এ বিষয়ে বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়কারী ও আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অনুষদের ডিন ড. জিল্লুর রহমান বলেন, সব প্রশ্নই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের মধ্যে ছিল। অধ্যায় ধরে ধরে প্রশ্ন দেখলে হবে না। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হওয়ায় যে বিষয়গুলো সিলেবাসের বাইরে এসেছে সেগুলো ওই শিক্ষার্থীর জানার কথা। এটি কম্পিটিটিভ পরীক্ষা। এখানে সিলেবাস মুখ্য নয়। মুখ্য হলো মেধা যাচাই করা।

কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের সমন্বয়কারী ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, আমরা পরিমার্জিত সিলেবাসের আলোকে ভর্তি পরীক্ষা নিতে চেষ্টা করেছি এবং সেই আলোকে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ভর্তি পরীক্ষার নির্দিষ্ট কোনো সিলেবাস থাকে না। এটাই স্ট্যান্ডার্ড। এটাই মানবিক।

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038387775421143