মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের এক শিক্ষার্থীকে রুমে ঢুকে রড ও স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধরের পর হল থেকে বের করে দিয়েছেন ওই হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এমনকি ভবিষ্যতে হলে এলে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।
ঢাবির জগন্নাথ হলের সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের ৭০১২ নম্বর কক্ষে গত মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক সত্যজিৎ দেবনাথের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে বলে ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী উৎসব রায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি অ্যান্ড বুড্ডিস্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ঘটনার পর থেকে উৎসব রায় হলের বাইরে আছেন। চিকিৎসা নিচ্ছেন ঢাবির মেডিকেল সেন্টারে। জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা মেডিকেল সেন্টারে তাঁকে দেখতে যান বলে জানা গেছে।
অভিযোগপত্রে ২৫ থেকে ৩০ জন তাঁর ওপর হামলা চালান বলে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করেছেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে খাওয়ার পর নিজ কক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন উৎসব রায়। এমন সময় সত্যজিতের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল তাঁর কক্ষের দরজার ছিটকিনি ভেঙে ভেতরে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায়। রড ও স্টাম্প দিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সত্যজিৎ দেবনাথ বলেন, উৎসব রায়কে শিক্ষার্থীরা মিলে হল থেকে বের করে দিয়েছেন। উৎসব যে মোবাইল চুরির সঙ্গে জড়িত, সে ব্যাপারে ১০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী তাঁর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মণ বলেন, উৎসবের বিরুদ্ধে মোবাইল চুরির অভিযোগ রয়েছে। তবে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষার্থীরাই তাঁকে বের করে দিয়েছেন।
হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। আবাসিক শিক্ষকদেরও জানানো হয়েছে। সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’