২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শনিবার ঢাকার ৬৮ কেন্দ্র ও সাত বিভাগীয় শহরে বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ‘ক’ ইউনিটের পরীক্ষায় ঢাকার কেন্দ্রে বেশি থাকলেও ‘খ’ ইউনিটের বেলায় ছিল ভিন্নচিত্র।
‘খ’ ইউনিটের মোট ২ হাজার ৩৭৮টি আসন সংখ্যার বিপরীতে এবার মোট আবেদনকারী ছিল ৪৭ হাজার ৬৩২ জন। প্রতি আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ২০ জন শিক্ষার্থী। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ইউনিটের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম। মোট ৪৭ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ঢাকায় পরীক্ষা দিয়েছেন ১৮ হাজার ৮৫০ জন শিক্ষার্থী, বাকিরা দিয়েছেন বিভাগীয় শহরগুলোতে। এর মধ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৬১৫, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ হাজার ৩৭৭, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজার ৮৫২, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হাজার ৭২, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হাজার ২০৪, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯২১ জন এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৭৪১ জন বসেছেন পরীক্ষায়।
পরীক্ষার লিখিত অংশে প্রশ্ন ভিন্ন হওয়ায় মেধা তালিকা নিশ্চিতে এটি বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান মিলিয়ে মোট ১২০ নম্বরে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
মধুপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান মিম বলেন, প্রশ্ন আমার কাছে খুব কঠিন লেগেছে, ঠিক যে রকম প্রশ্ন আসবে চিন্তা করেছিলাম, তেমনটা আসেনি। লিখিত পাস করলে চান্স পাবো। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট থেকে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়া আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রশ্ন স্ট্যান্ডার্ড হয়েছে। তবে সাধারণ জ্ঞানে অন্যান্য সময়ের থেকে এবার সামপ্রতিক প্রশ্ন বেশি এসেছে। নটরডেমের শিক্ষার্থী মিসবাহ করিম বলেন, আমার কাছে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারের ‘খ’ ইউনিটের প্রশ্নের ধরন একটু ভিন্ন লেগেছে। সাধারণ জ্ঞানের সমপ্রতি আর বাংলায় অনুধাবন প্রশ্নের আধিক্য ছিল। তবে সময়ের কারণে লিখিত অংশ ভালো হয়নি।
‘ক’ ইউনিটের পরীক্ষায় করোনা আক্রান্ত শিক্ষার্থীকে মেডিকেল সেন্টারে পরীক্ষার সুযোগ করে দেয়ার পর গতকাল কারান্তরীণ এক শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. একেএম গোলাম রব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের ভর্তিচ্ছু একজন শিক্ষার্থী ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। সেই শিক্ষার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের রায় ছিল, তার ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করা যায় কিনা। তখন আমরা কারাগারেই সেই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করেছি। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে শিক্ষার্থীর পরিচয় প্রকাশ করেননি তিনি। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এসএম মাছুম বাকী বিল্লাহ, সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এনামুল হক এবং প্রক্টর অফিসের একজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন বলে জানান তিনি। পরীক্ষা চলাকালে কলাভবনে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে বসেছেন। শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পরীক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা আমাকে অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা পরিচালনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নির্দিষ্ট সময়ের আগে শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গের ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা আরও বেশি দায়িত্বশীল আচরণ করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।