জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতি বিজড়িত ত্রিশালের ঐতিহ্যবাহী ত্রিশাল সরকারি নজরুল একাডেমির প্রধান শিক্ষক মো. মেজবাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে নীতিমালা ভঙ্গ করে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে অতিরিক্ত ২৮২ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
গত ৩০ অক্টোবর অভিযোগটি সরজমিনে তদন্ত করেন ভর্তি কমিটির সভাপতি ও ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আক্তারুজামান ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মফিজুল ইসলাম। গত ৩ নভেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জেলা প্রশাসক বরাবরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রেরণ করেছেন।
তদন্ত প্রতিবেদন সুত্রে জানা গেছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে ২০২২ জানুয়ারি মাসে মোট ৬২৫ শিক্ষার্থী থাকলেও অক্টোবর মাসে দেখা যায় ৯০৭ জন শিক্ষার্থী। এতে দেখা যায় ৬ষ্ঠ থেকে নবম পর্যন্ত মোট অতিরিক্ত ২৮২ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। অতিরিক্ত ২৮২ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আদায়কৃত ভর্তির ফি কোনো রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করা হয়নি। নির্ধারিত কোনো ব্যাংক একাউন্টেও জমা দেয়ার প্রমাণ মেলেনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ ২০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে এসব অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। যার টাকা আদায়ের পরিমাণ দাড়ায় ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা। এতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর জন্য ক্লাসে বসা ও শিক্ষকদের পাঠদানে বিঘ্ন ঘটছে।
ভর্তি কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ভর্তি বিধি অনুযায়ী ২০১৮ সাল থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি নীতিমালা মোতাবেক কমিটির মাধ্যমে ভর্তি করা হচ্ছে। কমিটির অনুমোদনের বাইরে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করার কোন সুযোগ নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান শিক্ষক বলেছেন, সকল শিক্ষকদের সর্বসম্মতিক্রমে রেজুলেশন করে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অভিযোগটি জানতে পেরেছেন। লিখিত অভিযোগটি আমার হাতে পৌঁছেনি। অভিযোগটি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে নজরুল একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আমি ৯ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ে যোগদান করেই দেখি অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমার ইচ্ছায় অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করিনি। স্থানীয় এমপি ও ভর্তি কমিটি সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ডিও লেটারের মাধ্যমে ভর্তি করা হয়েছে। আদায়কৃত ফি আমি আত্মসাৎ করিনি, ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে।