দারুলের সনদধারী অধ্যক্ষের এমপিওভুক্তির চেষ্টা, নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

দারুলের সনদধারী অধ্যক্ষের এমপিওভুক্তির চেষ্টা, নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

রাজশাহী প্রতিনিধি |

শিক্ষা জীবনে একাধিক তৃতীয় শ্রেণি নিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ বাগানো, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ উঠেছে রাজশাহীর মতিহার উপজেলার পদ্মা টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউটর অধ্যক্ষ মো. আমিনুল হকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হলে অধ্যক্ষ আমিনুল দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদে এমপিও পাওয়ার চেষ্টাও করেছেন। যদিও অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পাওয়ার কাম্য অভিজ্ঞতা নেই তার। এ নিয়ে  কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সাবেক সদস্য মো. আলাউদ্দিন।

জানা গেছে, এইচএসসি ও ডিগ্রিতে তৃতীয় বিভাগ থাকার পরেও পদ্মা টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউটর অধ্যক্ষ হয়েছে মো. আমিনুল হক। নীতিমালা অনুযায়ী তার কাম্য অভিজ্ঞতাও নেই। প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি এমপিওভুক্ত হলে তিনি অধ্যক্ষ পদে  এমপিওভুক্তির আবেদন করেন। কিন্তু দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ, অভিজ্ঞতায় ঘাটতি থাকায় তাকে এমপিওভুক্ত করেনি কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর।

জানা গেছে, দুরুল ইহাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ নিয়ে তিনি এমপিওভুক্তির আবেদন করেছেন। এতে তিনি দাবি করেছেন দারুল থেকে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে বিবিএ ও এমবিএ সনদ পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের প্রত্যয়ন জমা না দেয়ায় তা গ্রহণ করেনি অধিদপ্তর।

অভিযোগে জানা যায়, অধ্যক্ষ আমিনুল হকের এইচএসসি ও ডিগ্রিতে তৃতীয় বিভাগ থাকায় শিক্ষকতার করার যোগ্যতা থাকে না। যা ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দের জনবল কাঠামো অনুযায়ী শিক্ষক বা অধ্যক্ষের ক্ষেত্রে একটিও তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ তিনি রীতিমত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। অধ্যক্ষ আমিনুল হক ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ জুন। এছাড়া অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ পান ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ডিসেম্বর। চাকরির দুই বছরের মাথায় তিনি অধ্যক্ষ হয়েছেন।   

অভিযোগ সূত্রে আরও জানা গেছে, অধ্যক্ষ আমিনুল প্রথম নিয়োগ পান কম্পিউটার বিষয়ের প্রভাষক হিসাবে। তার দুবছর পরে অধ্যক্ষ হন। 

কিন্তু দেখা যায়- ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত আপডেট করা ব্যানবেইজের তথ্য অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারীদের তালিকায় অধ্যক্ষ আমিনুলের শিক্ষাগত যোগ্যতায় ১টি তৃতীয় বিভাগ দেয়া থাকলেও তার এইচএসসি ও ডিগ্রিতে তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি রয়েছে। 


 

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযোগকারী ম্যানেজিং কমিটির সদস্য থাকাকালীন যে সমস্ত শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ ছিল, বর্তমানে অর্থের বিনিময়ে ব্যাপক জালিয়াতি করে তা পরিবর্তন করা হয়েছে। এমনকি এমপিও ঘোষণার পরও জালিয়াতি করে অনেককে স্কুল শাখা থেকে কলেজ শাখায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া নিয়োগপ্রাপ্ত মো. মোমিন (ডেমোনেস্ট্রেটর হিসাবে) অধ্যক্ষের দাবিকৃত বিশাল অংকের টাকা দিতে না পারায় তার স্থানে আতাউর রহমান (ডেমোনেস্ট্রেটর হিসাবে) নিয়োগ দেয়া হয়।

এ বিষয়ে মো. মোমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ‘কলেজে ছিলাম। গরিব মানুষ বলে বাদ পড়ে গেছে। এখন এমপিও হয়েছে, তাই খরচা-পাতি (টাকা) চেয়ে অধ্যক্ষ বলেছে, তুমি খরচা-পাতি (টাকা) করতে পারবে না তোমার নিয়োগের সমস্যা আছে। পরে তোমারটা দেখবো।’   

তিনি আরও বলেন, ‘আতাউর ভোকেশনাল স্কুলে ছিল। আমাকে বাদ দিয়ে আতাউরকে টাকা নিয়ে (ডেমোনেস্ট্রেটর হিসাবে) নিয়োগ দিয়েছে অধ্যক্ষ। আমার কিছু বলাও নাই।’

এছাড়া মো. আতাউর রহমানকে নিয়োগ দেয়া হয় ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ফেব্রুয়ারি ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর হিসাবে ভোকেশনাল শাখায়। আর মো. মোমিনের নিয়োগ হয় ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ অক্টোবর ডেমোনেস্ট্রেটর হিসাবে কলেজ শাখায়। কিন্তু এমপিও ঘোষণার পর দেখা যায়, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত আপডেট করা ব্যানবেইসের তথ্য অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারীদের তালিকায় মো. মোমিনের নাম ডেমোনেস্ট্রেটর হিসেবে থাকলেও দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় মোমিনকে বাদ দিয়ে আতাউর রহমানের ডেমোনেস্ট্রেটর হিসাবে কাগজপত্র বেতনের জন্য পাঠানো হয়েছে। ব্যানবেইসের তালিকায় ২ জন আতাউর রহমানের নাম আছে। একই ব্যক্তির কলেজ ও ভোকেশনাল শাখায় নাম রয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ আমিনুল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘১৯৯৫ এর জনবল কাঠামো অনুযায়ী (কাম্য যোগ্যতা) হচ্ছে না। তবে ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের আদেশ অনুযায়ী হচ্ছে।’ এছাড়া ডেমোনেস্ট্রেটর মোমিনকে বাদ দিয়ে ভোকেশনাল থেকে আতাউরকে ওই পদে নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ মোমিন ও আতাউরের সাথে কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেইভাবে কমিটি কাজ করছে। এছাড়া এতো কথা মোবাইলে বলা সম্ভব না। আপনি চায়ের দাওয়াত নেন।’

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে - dainik shiksha ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল - dainik shiksha ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032360553741455