দীর্ঘদিন থাকা কর্মকর্তারা বহাল তবিয়তে - Dainikshiksha

শিক্ষা ভবনে বদলি পদায়নদীর্ঘদিন থাকা কর্মকর্তারা বহাল তবিয়তে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

 নতুন বদলি ও পদায়ন নিয়ে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে থাকা কর্মকর্তাদের বদলি না করা, অনিয়মে অভিযুক্তদের পদায়ন করা এবং সিনিয়রদের ডিঙিয়ে জুনিয়রদের বড় পদে পদায়নের কারণেই এ অসন্তোষ। এ নিয়ে তারা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এর প্রতিকার চাইবেন বলে একাধিক শিক্ষক নেতা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ কথা জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন নিজামুল হক।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি), জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), ঢাকা শিক্ষাবোর্ড ও মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডে বিভিন্ন পদে ৬ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত রয়েছেন অন্তত ৬০ জন কর্মকর্তা। নানা কৌশলের আশ্রয় নিয়ে তারা লোভনীয় পদগুলোতে থাকছেন। এ কারণে এসব পদে পরিবর্তন চাইছিল শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। কিন্তু নতুন মন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ২৪ মার্চ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১৮ কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয় এবং এসব পদে নতুন করে পদায়নও দেওয়া হয়। শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা এ বদলি ও পদায়ন নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলেছেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে একই পদে ও প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন তাদের বদলি করা হয়নি, তারা বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এছাড়া যারা নানা অভিযোগে অভিযুক্ত এবং অপেক্ষাকৃত জুনিয়র তাদেরই গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে পদায়ন করা হয়েছে।

শিক্ষা ক্যাডারের শীর্ষ দুটি পদ মাউশির মহাপরিচালক ও পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন)। এই দুজনই ১৪তম বিসিএসের কর্মকর্তা। অথচ বর্তমানে সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম, একাদশ ও ত্রয়োদশ বিসিএসের কমপক্ষে দেড় হাজার কর্মকর্তা চাকরিতে আছেন। এসব শিক্ষক এখন ক্ষুব্ধ। সিনিয়র এক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে বলেছেন, এভাবে বদলি ও পদায়নের মাধ্যমে শিক্ষা ক্যাডারকেই বিতর্কিত করে তোলা হয়েছে।

একাধিক শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা বলছেন, নানা অভিযোগে অভিযুক্ত একটি সিন্ডিকেট আবার পুনর্বাসন পেল। এই সিন্ডিকেটের নেতা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাবেক এক মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস)। তারা বলেছেন, এই এপিএস শিক্ষা ক্যাডারে ছিলেন। তিনি শিক্ষা ক্যাডারের বদলি ও পদায়ন করতে গড়ে তুলেছিলেন সিন্ডিকেট। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় ওই এপিএসকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সাবেক ওই এপিএস এখন আবার তার সিন্ডিকেট শক্তিশালী করেছেন। তার পছন্দের কর্মকর্তাদেরও গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে।

সমাজ বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক দিল আফরোজ বিনতে আছির ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে মাউশিতে আছেন। তাকে বদলি করা হয়নি। বদলি করা হয়েছে ৩ বছরও হয়নি এমন কর্মকর্তাকে।

পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক হিসেবে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি থেকে কর্মরত অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। এর আগে তিনি শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ছিলেন ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের১৬ জুলাই পর্যন্ত। ঘুরে ফিরে আছেন তিনিই। তাকে বদলি করা হয়নি।

সহকারী পরিচালক তাসলিমা সুলতানা আছেন ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে, দিলরুবা আক্তার আছেন ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে, সহকারী পরিচালক আশেকুল হক আছেন ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে। এভাবে অনেক কর্মকর্তা ৫ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

এনসিটিবিতে অধ্যাপক সাহানা আহমেদ, অধ্যাপক জারিয়া তুল হাফসা, সহকারী অধ্যাপক শাহ তাসলিমা সুলতানা প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় এ প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন। তারাও রয়েছেন বহাল তবিয়তে।

২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে মাউশিতে সহকারী পরিচালক বিশেষ পদে পদায়ন পান ছিদ্দিকুর রহমান। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিলে হাইকোর্ট তাকে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন এবং তার কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে তিরস্কার করেন। তার দুর্নীতির ও অসদাচরণের জন্য ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে তার বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিভাগীয় মামলাও করেছিল। সর্বশেষ তিনি ছিলেন দুয়ারি পাড়ার একটি সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে। তাকে দেওয়া হয়েছে মাদরাসা বোর্ডের রেজিস্ট্রার হিসেবে। কামালউদ্দিন মাদরাসা বোর্ডের উপ-রেজিস্ট্রার ছিলেন। তাকে এই পদ থেকে সরানোর দাবি ছিল। কিন্তু তাকে দেওয়া হয়েছে আরো বড় পদে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে।

প্রফেসর তপন কুমার সরকার ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বোর্ডে উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হন এবং পরবর্তীতে সিনিয়র প্রফেসর পদমর্যাদার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হন সহযোগী অধ্যাপক পদে থেকে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। তিনি এবার দায়িত্ব পেলেন ঢাকা বোর্ডের সচিব হিসেবে।

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি ও রাজধানীর সরকারি নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ আই কে সেলিমউল্লাহ খন্দকার বলেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে একই স্থানে আছেন, শিক্ষার স্বার্থে তাদের দ্রুত বদলি করা উচিত। এছাড়া মাউশির মহাপরিচালক, পরিচালক এবং বিভিন্ন বোর্ড ও দফতর-অধিদফতরের পদগুলোতে সাধারণত সিনিয়র শিক্ষকদের পদায়নের রেওয়াজ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065319538116455