বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে চাকরি দেয়ার কথা বলে ৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। উপজেলার ৯৫ নম্বর বড়ইতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন শিশির কুমার সাহা নামের এক ব্যক্তি। ইতোমধ্যে বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে মোরেলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিস।
জানা গেছে, শিশির কুমার সাহা বিষয়টি জানিয়ে বাগেরহাট ৪ আসনের সংসদ সদস্য আমিরুল আলম মিলনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সংসদ সদস্য অভিযোগপত্রটি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দীনের কাছে ব্যবস্থা নিতে পাঠিয়েছেন। এ বিষয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নাসির উদ্দিন হাওলাদার বিভিন্ন দপ্তরের বড় বড় পদে তার আত্মীয়-স্বজন আছে বলে প্রচার করেন। সেই আত্মীয়দের দিয়ে নিশ্চিত চাকরির দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। পূর্ব পরিচিত হওয়ায় শিক্ষক নাসির তার বাবা মো. সেকেন্দার আলীকে সঙ্গে নিয়ে গত এপ্রিল মাসে বাগেরহাট শহরের নাগেরবাজারে এক চায়ের দোকানে আসেন। সেখানে আলাপকালে শিশির কুমার সাহার একজন নিকটাত্মীয়ের চাকরি নিশ্চিত বলে বিভিন্ন লোভ দেখান। একপর্যায়ে কয়েকজন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে ৩ লাখ টাকা দেন নাসির উদ্দিনকে। সে সময় নাসির তার বাবার সোনালী ব্যাংকের হিসাবের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনের সমপরিমাণ টাকার চেক গ্রহণ করেন। এভাবে কয়েক কিস্তিতে শিশির সাহার কাছ থেকে শিক্ষক নাসির ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন। এক পর্যায়ে শিশির সাহাকে ঢাকায় নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব পরিচয়ে আলমগীর নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে চলতি বছরের জুলাই মাসে নাসিরের কথামত শিশির সাহা আলমগীর নামের ওই ব্যক্তির এলিফ্যান্ট রোডের একটি ব্যাংক হিসাব নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠান। পরে জানতে পারেন ওই আলমগীর হোসেন তার আপন ভগ্নিপতি। এভাবে মোট ৯ লাখ টাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগে দাবি করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক নাসির উদ্দিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অভিযোগকারীদের কাছে আমি ৯ লাখ টাকা পাবো। তারা আমার কাছে কোনো টাকা পাবে না।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দীন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিষয়টি তদন্তের জন্য গত বৃহস্পতিবার ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৭ কার্যদিবসে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাকরির প্রলোভনে এর আগেও বিভিন্ন দপ্তরে কয়েকটি অভিযোগ দাখিল হয়েছিল সেগুলো তদন্তাধীন রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগে একাধিক বিভাগীয় মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।