রংপুর জেলার প্রায় দেড় হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র বসানোর জন্য বরাদ্দ প্রায় ৩ কোটি টাকার কোনো হদিস নেই। বিদ্যালয়গুলো উন্নয়ন পরিকল্পনা (স্লিপ) প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের গাইডলাইন অনুসারে কোনো স্কুলের জন্য বরাদ্দ অর্থ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধানের যৌথ হিসাবে থাকার কথা।
কিন্তু রংপুরের বেশির ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা সেই অর্থ তুলে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।জেলার আট উপজেলায় ১ হাজার ৪৫৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্লিপ ফান্ডের বরাদ্দ থেকে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র কেনার কথা ছিল। এর মধ্যে মাত্র কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেনা হয়েছে এই যন্ত্র। অন্য স্কুলগুলোতে বরাদ্দের অর্থ প্রধান শিক্ষকরা ব্যক্তিগত কাজে খরচ করেছেন। ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর রংপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় স্লিপ ফান্ডের বরাদ্দ থেকে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র কেনার নির্দেশ দেয় প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্লিপ ফান্ডের গাইডলাইন অনুযায়ী, ২০০ শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে ৫০ হাজার টাকা ও ২০০ থেকে ৫০০ শিক্ষার্থীর স্কুলে ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই হিসেবে ২০ কোটি ৯১ লাখ ৬০ হাজার টাকার বরাদ্দ আসে। এর মধ্যে বায়োমেট্রিক যন্ত্র কেনার জন্য প্রতিটি স্কুল ২০ হাজার টাকা করে পায়। সে হিসেবে এক হাজার ৪৫৫টি বিদ্যালয় পায় ২ কোটি ৯১ লাখ টাকা। কিন্তু ঐ অর্থবছর শেষ হওয়ার পরও সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যন্ত্র বসেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, এক অর্থবছরের টাকা খরচ না হলে তা অন্য অর্থবছরে ফেরত দিতে হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। কোনো বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যদি সরকারি টাকা সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নিজ অ্যাকাউন্টে রাখে সেটি অপরাধ।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাজাহান সিদ্দিক বলেন, ‘স্লিপের টাকায় কী কী করা যাবে তার নির্দেশনা আছে। টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে তা জানতে আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়েছি। উত্তর পেলে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাব। এরপর মন্ত্রণালয় যে নির্দেশনা দেবে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।