ধারাবাহিক আন্দোলনে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

ধারাবাহিক আন্দোলনে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

রাবি প্রতিনিধি |

স্থগিত পরীক্ষা নিয়ে নেয়া, হল-ক্যাম্পাস খুলে দেয়া ও গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস বাস্তবায়নের দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলনে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। স্থগিত হওয়া পরীক্ষা চালু করতে আগামী রোববার পর্যন্ত ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময়ের মধ্যে পরীক্ষা চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত না এলে পুনরায় আন্দোলনে নামার হুশিয়ারি দিয়ে রেখেছে তারা।

এদিকে হল-ক্যাম্পাস খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দেয়া ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে ধারাবাহিক আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ‘ক্যাম্পাস-হল বন্ধবিরোধী’ সংগঠনসমূহের ব্যানারে থাকা শিক্ষার্থীদের একটি জোট। তাদের দাবি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রাবি যদি শিক্ষামন্ত্রীর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে যায়, তাহলে তা হবে ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও স্বায়ত্তশাসনের লঙ্ঘন।

‘ক্যাম্পাস-হল বন্ধবিরোধী’ সংগঠনসমূহের ব্যানারে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্র ফেডারেশন একসাথে এ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে মানববন্ধন করেছিল শতাধিক শিক্ষার্থী। একই সময়ে বিক্ষোভর কর্মসূচি থাকলেও সেসময় তাদের পরীক্ষায় দাবিতে মাঠে থাকা আন্দোলনকারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে মাঠে নামেনি ছাত্রসংগঠন গুলো। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে এ কর্মসূচি পালন করার কথা ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন নিয়ে প্রশ্ন তুলে ছাত্র ফেডারেশনের রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাব্বত হোসেন মিলন বলেন, একটা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্ত্রনালয়ের দিকে তাকিয়ে থাকার সুযোগই নাই। বিশ্ববিদ্যালয় নিজেই একটা স্টেট হিসেবে কাজ করে। বিশ্ববিদ্যালয় যদি মন্ত্রণালয়ের কথামতো চলে, তাহলে এটা তো স্বায়ত্তশাসনেরই লঙ্ঘন। ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইনের লঙ্ঘন। কিন্তু এখানে সমস্যাটা হলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে যারা নিয়োগ পাচ্ছেন তারা সরকারকে তেলবাজি করে মদদপুষ্ট হয়ে আছে, যেজন্য তারা সরকারের বিপক্ষে যায় এমন কোনো কথা বা কাজ করতে পারছে না। সেটা ছাত্রদের বিপক্ষে গেলেও তারা করছে, করে।

পরীক্ষা চালুর দাবিতে মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘‘হঠাৎ করে পরীক্ষা স্থগিত করায় আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি মানসিক সমস্যায়ও পড়ছেন তারা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজশাহী এসেছেন শুধুমাত্র পরীক্ষা দেয়ার জন্য। কিন্তু এ সিদ্ধান্তকে হঠকারী উল্লেখ করে তারা তীব্র প্রতিবাদ এবং অনতিবিলম্বে পরীক্ষা চালুর দাবি জানাচ্ছেন তারা।’’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনির ঘোষণায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চলমান পরীক্ষাসহ সকল ধরনের পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে অনেক শিক্ষার্থীর দুই অথবা একটি পরীক্ষা থাকতেই স্থগিত হয়ে যাওয়ায় তীব্র সেশনজট ও অনিশ্চয়তায় পড়ে যায় এসব শিক্ষার্থীরা।

এবিষয়ে ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী তমালিকা পিংকি বলেন, ‘‘আমাদের পরীক্ষা চলমান ছিল এবং দুই একটা পরীক্ষা আটকে আছে। এসময়ে এসে আমরা বেকায়দায় পড়ে গেলাম। পরীক্ষা দেয়ার জন্য মেস ভাড়া নিয়েছি। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় আমাদের পক্ষে এখন পরীক্ষা না দিয়ে বাড়ি ফেরা সম্ভব নয়।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লুৎফর রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার পর আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে চলমান পরীক্ষাগুলো স্থগিত করেছি। তোমরা যদি এই মানববন্ধন নাও করতে তাহলেও আমি তোমাদের পরীক্ষার ব্যাপারে প্রশাসনের সাথে কথা বলতাম। সামনে থাকা পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে আমি ভিসি স্যারের সাথে কথা বলব। তোমাদের দাবি না মানা হলে আমি সহ আমার প্রক্টোরিয়াল বডি আপ্রাণ চেষ্টা করবো।’’

তবে মার্চের প্রথম সপ্তাহে হলসহ ক্যাম্পাস খুলে দেয়ার দাবিতে থেকে পিছু হটছে না শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চালুর কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বাদ দিলেও আজ(২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪ টায় প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্তরে আয়োজন করা হয়েছে সে কর্মসূচি। সেখানে থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত - dainik shiksha ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল - dainik shiksha শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে - dainik shiksha ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল - dainik shiksha ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067601203918457