মুখস্ত জ্ঞাননির্ভর শিক্ষা পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে অভিজ্ঞতা নির্ভর শিক্ষার দিকে ঝুঁকছে সরকার। এজন্য প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাব্যবস্থার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়েছে। নতুন কারিকুলামে এসএসসি পরীক্ষা হবে শুধুমাত্র দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচি অনুসারে। আর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বিভাগ বিভাজন করা হবে। আগের মত মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বিভাগ বিভাজন থাকছে না। মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষার্থীকেই নির্ধারিত দশটি বিষয় পড়তে হবে।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) নতুন কারিকুলামের নানা দিক নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আলোচনা করেন শিক্ষামন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা সনদের জন্য শিক্ষা লাভ করবে না, একটি নির্দিষ্ট পারদর্শিতা অর্জনের জন্য শিক্ষা নেবে।
তিনি জানান, নতুন কারিকুলামে শিক্ষা হবে আনন্দঘন। এ কারিকুলামে মুখস্ত জ্ঞাননির্ভর শিক্ষা থেকে সরে এসে অভিজ্ঞতানির্ভর শিক্ষায় প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরবচ্ছিন্ন ধারাবাহিক শিখন নিশ্চিত করা হচ্ছে। পরীক্ষার বিষয় ও পাঠ্যপুস্তকের চাপ কমানোর চেষ্টা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেদের মত কিছুটা সময় কাটাতে পারে তা নিশ্চিত করতেই নতুন কারিকুলাম। শিক্ষাকে সহজ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
মুখস্ত জ্ঞাননির্ভর নয়, শিক্ষার্থীরা যাতে কিছু করার মাধ্যমে শিখতে পারে তা নিশ্চিত করা হয়েছে নতুন কারিকুলামে। শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়ে বলেন, নতুন কারিকুলামে মুখস্ত বিদ্যার বদলে অভিজ্ঞতা নির্ভর শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে খেলাধূলা বা নিজে কিছু করে শিখতে পারে তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের দক্ষতার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের কারিকুলামে একটি কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের নানা দক্ষতা অর্জনের সুযোগ থাকছে। নতুন কারিকুলামে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এছাড়া নতুন সিলেবাসে করোনা অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে সনদ দেওয়ার ব্যবস্থা নতুন কারিকুলামে হবে। প্রাথমিক শেষে ও অষ্টম শ্রেণি শেষে শিক্ষার্থীদের সনদ দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে পারে। শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়ে জানান, পাবলিক পরীক্ষা নিয়েই যে সনদ দিতে হবে এটা কোনো কথা না। পঞ্চম শ্রেণি শেষে সনদের ব্যবস্থা থাকতে পারে। অষ্টম শ্রেণির শেষে সনদের ব্যবস্থা থাকতে পারে। বিদেশে প্রাথমিক পর্যায় শেষ করার পরেও বাচ্চাদের গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠান হয়।
মন্ত্রী বলেন, সনদ দিয়ে যদি শিক্ষার্থী উদ্বুদ্ধ বোধ করেন সে জন্য সনদটা। সনদের জন্য শিক্ষা নয়, শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতেই শিক্ষা। তারা যে পারদর্শিতা অর্জন করেছে তার স্বীকৃতিই সনদ। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা পারদর্শিতা অর্জন করুক ও তারা স্বীকৃতি হিসেবে সনদও পাবে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি পাবলিক পরীক্ষা দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে হবে। আমরা অষ্টমের পাবলিক পরীক্ষার কথা বলিনি। ৫ম শ্রেণিতে পাবলিক পরীক্ষার কথা বলিনি। তবে প্রতিক্লাসেই সমাপনী পরীক্ষা আছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ৫ম শ্রেণিতেও একটা সনদ দিয়ে দেব, সমস্যা কি। পাবলিক পরীক্ষা নিয়েই যে সনদ দিতে হবে এমন কোনো কথা নেই। বছর শেষে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবেই।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।