নদীর তীব্র স্রোতে ভাঙনের ঝুঁকিতে বিদ্যালয় - দৈনিকশিক্ষা

নদীর তীব্র স্রোতে ভাঙনের ঝুঁকিতে বিদ্যালয়

ধামরাই প্রতিনিধি |

ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে নওগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২০০ বছর বয়সী একটি বটগাছ ও ১৫টি দোকান। নদীতে বাঁধটি থাকলে যেকোনো সময় এগুলো ভেঙে যেতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। গাজীখালি নদীর তীব্র স্রোতে ভেঙে গেছে দুটি দোকান। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আরও স্থাপনা। 

ধামরাইয়ের সুতিপাড়া ইউনিয়নে গাজীখালি নদীর তীব্র স্রোতে বিলীন হয়ে গেছে দুটি দোকান। এ ছাড়া ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৫টি দোকান ও ২০০ বছর বয়সী একটি বটগাছ। নদীতে বাঁধ দেওয়ায় পানিপ্রবাহে বাধা পেয়ে সৃষ্টি হয়েছে এ স্রোতের। তবে বাঁধটি কারা নির্মাণ করেছে, সেটি কেউ স্বীকার করছে না।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০১৯ সালের শুরুর দিকে উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নের নওগাঁও বাজারের পাশে গাজীখালি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ হয়। তখনই এ নদীতে বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়। সেই রাস্তা দিয়ে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা চলাচল করছে। এ ছাড়া নূরুল ব্রিকস, কেবিকো ব্রিকস ও আহাদ ব্রিকসসহ স্থানীয় কয়েকটি ইটভাটার ইট ও মাটি আনা–নেওয়া হয় বাঁধটি দিয়ে। 

সেতুটির নির্মাণকাজ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো ৪০ শতাংশ কাজ বাকি আছে। ফলে বাঁধ দিয়ে তৈরি করা রাস্তাটি এখনো রয়ে গেছে। বাঁধের মাঝখানে কংক্রিটের তৈরি দুটি স্ল্যাব বসানো হয়েছে। যে স্ল্যাব দিয়ে পর্যাপ্ত পানি বের হতে না পারায় স্রোতের তীব্রতা বেড়ে গেছে।

গাজীখালির তীব্র স্রোতে ইতিমধ্যে দুটি দোকান নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে নওগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২০০ বছর বয়সী একটি বটগাছ ও ১৫টি দোকান। নদীতে বাঁধটি থাকলে যেকোনো সময় এগুলো ভেঙে যেতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

ছবি : সংগ্রহীত

নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া মুরগির দোকানের মালিক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমার ৬০–৬৫ বছর বয়সে দেখি নাই এই নদী দিয়ে এমন স্রোত হয়। এটা তো ছোট একটি খালের মতো। যদি সেতুর পাশে এই নদীতে বাঁধ না দিত, তাহলে আমার এত বড় ক্ষতি হতো না। নদীতে বাঁধ দিয়ে রাস্তা তৈরির কারণে পানির স্রোত বেশি হয়েছে।’

আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমার মুরগির দোকান পুরোপুরি ভেঙে পড়ে গেছে। মুরগিও সব সরাতে পারিনি। একটি ড্রেসিং মেশিনও নদীতে চলে গেছে। এ ঘটনায় আমার প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

৫০ নম্বর নওগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রসুল বলেন, ‘হঠাৎ করে গাজীখালি নদীর স্রোতে বাজারের দুটি দোকান বিলীন হয়ে গেছে। তাই আমি বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আর আমরা আমাদের মতো করে, বালুভর্তি বস্তা দিয়ে চেষ্টা করছি ভাঙন থেকে বাঁচতে।’

সেতু নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জয়েন্ট ব্রিক ট্রেডার্সের উপসহকারী প্রকৌশলী শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘নদীর ওপর দিয়ে ওই রাস্তাটি আমরা তৈরি করিনি। রাস্তাটি ইটভাটার মালিকেরা তাদের সুবিধার জন্য করেছে। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধান করলে ভালো হয়। তা ছাড়া ইউএনও বরাবর লোকজন আবেদন করলে দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’

ধামরাই ইটভাটার মালিক সমিতির সভাপতি ও কেবিকো ব্রিকসের মালিক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নদীর ওপর ওই বাঁধ দিয়ে রাস্তা আমরা তৈরি করিনি। এই রাস্তা সেতু তৈরির লোকজন করেছে তাদের কাজের সুবিধার জন্য। তবে রাস্তাটি হওয়ার পর আমাদের ইটভাটার গাড়ি চলাচল করে। কিন্তু সবার সুবিধার জন্য রাস্তাটি কেটে দিলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।’

নওগাঁও বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘নদীতে বাঁধ দিয়ে তৈরি করা এই রাস্তাটি ইটভাটার মালিকেরা ভাঙতে দেয় না। তাদের প্রভাব বেশি। দুটি দোকান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। একটি মুরগির, আরেকটি ডেকোরেটরের দোকান। রাস্তা কেটে না দিলে বাজারের সব দোকান ও স্কুলটি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। এ বিষয়ে আমরা বর্তমান চেয়ারম্যানকে বলেছি একটা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি আমাদের দুই দিন ধরে ঘোরাচ্ছেন।’

সুতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম রাজা বলেন, ‘রাস্তাটি তো দুই–তিন বছরের। আর ব্যবস্থা তো যারা রাস্তাটি করেছে তারা করবে। সেতু তৈরির লোকজন রাস্তাটি করেছে। সেতুর ঠিকাদারকে আমি বলেছি ফোন করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’

দুটি দোকান ভাঙনের পর বিদ্যালয়সহ আরও দোকান ঝুঁকিতে আছে জানার পর আপনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন কি না, এমন প্রশ্নে চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপনি কাউন্সিল অফিসে (ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়) আইসেন, বসে কথা বলুমনি। আমি কালকে কাউন্সিলে আছি।’

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (ঢাকা বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আইনুল হক বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কেউ কিছু জানায়নি। আপনার মাধ্যমেই বিষয়টি জানতে পারলাম। অবশ্যই এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034949779510498