নাকফুলে বড় স্বাস্থ্য ঝুঁকি - দৈনিকশিক্ষা

নাকফুলে বড় স্বাস্থ্য ঝুঁকি

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

নারীদের ফ্যাশনে অন্যতম ও বেশ জনপ্রিয় অনুষঙ্গ হলো নোজপিন; বাংলায় বলে নাকফুল। চেহারায় স্মার্ট লুক আনতে মুখের গড়ন অনুযায়ী অনেকেই নোজপিন ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এই নোজপিন যে বড় স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে সেটি চিন্তাও করতে পারেননি ভারতের বর্ষা সাহু। 

দুর্ঘটনাক্রমে নোজপিনের স্ত্রুটি ঢিলা হয়ে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ভেতরে চলে যায়। তিনি ভেবেছিলেন, সেটি তার পেটের ভেতরে চলে গেছে এবং পাচনতন্ত্রের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কিন্তু ধাতব বস্তুটি তার ফুসফুসে আটকে যায় এবং তার বড় ধরনের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

যখন বর্ষার শ্বাসকষ্ট শুরু হলো দখন দ্বারস্থ হলে সেটি অপারশেনের মাধ্যমে বের করা হয়। বর্ষার এখন বয়স ৩৫। প্রায় ষোল-সতের বছর আগে বিয়ের পর থেকে তিন একটি নোজপিন বা নাকফুল পড়তে শুরু করেন। এখানে বলা ভালো উপমহাদেশে নাকফুল বৈবাহিক অবস্থার প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়।   

কানের দুল, চুড়ি, আংটি, গলার হার- এগুলোর মধ্যে নাকফুলও একটি অলঙ্কার। উপমহাদেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিবাহিত নারীরা ব্যবহার করেন। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় যে, নাকের ছিদ্রটি বাম পাশে করা। নাকের ফুলের মধ্যেও ভিন্নতা থাকে, যেমন নাক ফুল, নথ বা নোলক।

তবে সবগুলোই নাকের সঙ্গে একটি স্ক্রুটি দিয়ে লাগানো থাকে। সেটিই কাল হয়েছিলো কলকাতার মেয়ে বর্ষা সাহুর জন্য। বিবিসিকে সেই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি মোবাইল ফোনে চ্যাট করার সময় একটি বড় নিঃশ্বাস নিলাম। থকন বুঝতে পারলাম নাকফুলের স্ক্রুটি নাকের ভেতর ঢুকে গেছে। 

দুই সন্তানের মা বর্ষা ভেবেছিলেন নাকফুলের স্ক্রুটি তার পেটে চলে গেছে এবং এক সময় তা পাচনতন্ত্র দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কিন্তু আসলে সেটি চলে যায় তার ফুসফুসে। প্রথম প্রথম সেটি বুঝতে পারেননি তিনি। পরে শরীরে অস্বস্তি এবং আর কিছুদিন পরে স্বাসকষ্ট শুরহবার পর ছুটে যান ডাক্তারের কাছে। 

এই ধরনের দুর্ঘটনাকে খুবই বিরল বলে উল্লেখ করেছেন কলকাতার মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের পালমোনোলজিস্ট ডাঃ দেবরাজ জাশ। তিনিই বর্ষার নাকফুলটি অপারেশন করে বের করে আনেন। দেবরাজ বলেন, গেল এক দশকে এ ধরনের ঘটনা দুবার শিরোনাম হয়েছিলো। 

তিনি বিবিসিকে বলছিলেন, ভারতে নাক দিয়ে বিভিন্ন বস্তু ঢুকে যাওয়ার দুর্ঘটনার কম নয়। শুকনো ফল বা সুপারির মতো বস্তু নাকের ভেতর দিয়ে ঢুকে ফুসফুসে চলে যাবার ঘটনাও বিরল নয়। এ ধরনের দুর্ঘটনা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিশু, না হয় বয়স্কদের হয়। তবে ৩৫ বছরের নারীর ক্ষেত্রে বিরল। 

বড় নিঃশ্বাসের সঙ্গে নাকফুলের স্ক্রুটি ভেতরে চলে যাবার এক মাস পরে বর্ষার অবিরাম কাশি শুরু হয় এবং তিনি শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ার অভিযোগ করতে থাকেন। তিনি একজন ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি জানান নাকে কোন আঘাতের কারণে এমনটি হচ্ছে। কিন্তু ওষুধে সেরে না ওঠায় বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠিয়ে দেন। 

বর্ষা সাহু একজন পালমোনোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করেন। একটি সিটি স্ক্যানে তার ফুসফুসে বস্তুটি শনাক্ত করেন এবং পরবর্তী বুকের এক্স-রে দেখায় যে, এটি কী ছিল। পালমোনোলজিস্ট একটি ফাইবারোপটিক ব্রঙ্কোস্কোপ সেটি বের করতে চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন। তিনি রোগীকে ডাঃ জাশের কাছে রেফার করেন।

ডাঃ ঝাম বলেন, আমাদের প্রথমে রোগীকে কাউন্সেলিং করতে হয়েছিল। কারণ সে ভেঙ্গে পড়েছিলো। কিন্তু আমরা তাকে বুঝিয়েছিলাম যে মানবদেহ এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে কোনও বিদেশি বস্তুর জন্য কোনও স্থান নেই। যতক্ষণ সেটি থাকবে ততক্ষণ সেটি যন্ত্রণা দেবে। 

তিনি জানান, বড় অপারেশনে না গিয়ে ফাইবারোপটিক ব্রঙ্কোস্কোপ করার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও এটি বেশ কঠিন ছিলো। কারণ স্ক্রুটি তার ফুসফুসে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ছিল এবং এর চারপাশে টিস্যু বেড়ে উঠেছিলো। কিন্তু অত্যন্ত সতর্কতার পর তিন মিনিটের চেষ্টায় স্ক্রুটি বের করে আনা হয়। 

নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034058094024658