সেশনজট কমানোর উদ্যোগ নিতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে রাজশাহী নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) উপাচার্য (ভিসি) ডা. এ জেড এম মোস্তাক হোসেনকে তারা এ আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে উদ্যোগ না নিলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন রামেবির অধিভুক্ত এ নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সেশনজট কমানোর দাবিতে গতকাল বুধবার রাজশাহী নার্সিং কলেজের ২০১৭-২০১৮, ২০১৮-২০১৯, ২০১৯-২০২০ এবং ২০২০-২০২১ সেশনের চার বছর মেয়াদী বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলে।
সমাবেশে বক্তব্য দেন, তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, জয়নাল আবেদীন জয়, পারভেজ মোশাররফ, নাজমুল হোদা, আসিফ কামাল, মাসুম রেজা, সাখাওয়াত হোসেন, মেহেদী হাসান সম্রাটসহ অনেকে। পরে তাঁরা কলেজ অধ্যক্ষ ড. ফয়েজুর রহমানের মাধ্যমে রামেবি ভিসিকে একটি লিখিত আবেদনপত্র দেন। সেখানেই ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা লেখেন, তারা বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে রাজশাহী নার্সিং কলেজে ভর্তি হন। একই ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সেশনের শিক্ষার্থীরা যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত, তারা শিক্ষা কার্যক্রমে প্রায় দেড় বছর এগিয়ে গেছে।
অন্যদিকে রামেবি অন্তর্ভুক্ত সরকারি, বেসরকারি নার্সিং কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়েছে। সেশনজট নিরসনে কলেজ প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে এক বছরে কয়েকদফা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দল আনুষ্ঠানিকভাবে দেখা করেন এবং যুগোপযোগী ও শিক্ষার্থীবান্ধর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিতভাবে আবেদন জানান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখন অবধি এ সেশনজট নিরসনে কোনো উল্লেখযোগ্য এবং কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন কোনোটাই করতে সক্ষম হয়নি।
শিক্ষার্থীরা আরও লেখেন, পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে যে এখন সেশনজটের ক্ষতির হাত থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব নয়। করোনার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবান্ধর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যথাসম্ভব দ্রুত থেকে দ্রুত কোর্সের কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে শিক্ষার্থীদের সেশনজট নিরসনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছে। অথচ রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নার্সিং অনুষদ কোনো প্রকার কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করেনি। এ কারণে শিক্ষার্থীরা হতাশাগ্রস্ত। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান জানান, বৃহস্পতিবারসহ তিন দিন তারা বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। এই সময়ের মধ্যে সেশনজট নিরসনে কোন উদ্যোগ নেয়া না হলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবেন। এছাড়া এখন আর তাদের উপায় নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামেবি ভিসি ডা. এ জেড এম মোস্তাক হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘করোনার কারণে সেশনজট দেখা দিয়েছে। আগের ভিসি অসুস্থ থাকার কারণে উদ্যোগ নিতে পারেননি। এখন সমাধান তো খুব অল্প সময়ে হবে না। ক্রমান্বয়ে কাভার করার চেষ্টায় আছি।’