নিরাপদ সড়কের দাবি পূরণে শিক্ষার্থীদের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হয়ে গেছে। হাফ ভাড়ার দাবি আংশিক পূরণ হলেও তাদের বেশির ভাগ দাবির বিষয়ে এখনো স্পষ্ট কিছু জানায়নি সরকার। এ অবস্থায় নতুন বছর নতুন পরিকল্পনা নিয়ে পুরনো দাবি আদায়ে আবার সড়কে নামতে পারে শিক্ষার্থীরা।
গেল বছরের শেষের দিকে হাফ ভাড়া, নিরাপদ সড়কসহ নানা দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামে।
গত ডিসেম্বরে তারা দাবি পূরণে সরকারকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়।
গতকাল রাজধানীর রামপুরায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে আবারও সড়কের পাশে অবস্থান নেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সকাল ১১টার দিকে ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থী রামপুরা সেতুর ওপর সড়কের পাশে অবস্থান নিয়ে হাতে লেখা বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত পোস্টার তৈরি করে। পরে সেই পোস্টারগুলো আশপাশের দেয়ালে টাঙিয়ে দেয় তারা।
পোস্টারগুলোতে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘বাসে নারী যাত্রীদের সম্মান দিতে হবে’, ‘আমরা আছি থাকব যুগে যুগে লড়ব’, ‘সড়কের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন লড়াই করুন’ এমন নানা স্লোগান ছিল।
রামপুরা এলাকায় শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির সমন্বয়কারী খিলগাঁও মডেল কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলে, ‘আমরা আজ (গতকাল) এক ঘণ্টার মতো রাস্তায় পাশে অবস্থান নিয়ে নিজেরা পোস্টার তৈরি করেছি। সেই পোস্টার আশপাশে লাগানো হয়েছে। পাঁচ-ছয় দিন পর আবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। ’
সোহাগী বলে, ‘আমাদের দাবি পূরণে সরকারকে যে সময় বেঁধে দিয়েছিলাম, সে সময়ের মধ্যে সরকারকে আমরা কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে দেখিনি। তাই, দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি নিয়ে আবারও আমরা রাস্তায় নামব। ’
গতকাল বিকেলে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের (নিসআ) ব্যানারে সেগুনবাগিচায় কেন্দ্রীয় কচিকাঁচা ভবনে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকারীদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্যম’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
অনুষ্ঠানে মান্না বলেন, প্রতিনিয়ত বাসে রেষারেষিতে প্রাণ যাচ্ছে মানুষের। তাতে কারো কিছু যায় আসে না। এর আগেও দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখন সেটি আরো বেড়েছে। যখন নিরাপদ সড়ক আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তখন ছিল নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন। বর্তমানে সেটি নিরাপদ সড়ক ও রাষ্ট্র সংস্কারের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এই কিশোর-তরুণদের হাতে দেশের ভবিষ্যৎ গড়ে উঠবে।
মান্না বলেন, ‘নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সঙ্গে আমার দল নাগরিক ঐক্য তোমাদের সঙ্গে আছে। ’
মিলনমেলার উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে নিসআর যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ মেহেদী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা অনেক দিন ধরেই চাচ্ছিলাম সব আন্দোলনকারীর একটা জায়গায় বসা হোক। তাই এই আয়োজন। এতে অংশগ্রহণকারীরা ২০৫ টাকা করে চাঁদা দিয়েছে। আমাদের কারো একার পক্ষে কোনো আয়োজন করা সম্ভব নয়। আন্দোলনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কেমন হবে, সেটা সবার সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। ’