মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশ উপেক্ষা করে করোনার মধ্যেই পরীক্ষা নিচ্ছে সরকারি ও চার্চ পরিচালিত কয়েকটি স্কুল। ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকটি স্কুলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পাওয়া গেলেও কর্তৃপক্ষ কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও চট্টগ্রাম সরকারি নাসিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিভাগ নির্ধারণের জন্য বৃহস্পতিবার ৪০০ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে পরীক্ষা নেয়া হয় ।
প্রধান শিক্ষক এম ফরিদুল আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ’অনেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়তে চায়। কিন্তু তারা পড়ার চাপ নিতে না পেরে এসএসসিতে কৃতকার্য হতে পারে না। তাই বিভাগ নির্ধারণের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।’
কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) জানিয়েছে, বিভাগ নির্ধারণে পরীক্ষা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এভাবে পরীক্ষা গ্রহণ নিয়মবহির্ভূত। [inside-ad-a1]
মাউশি অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক দেবব্রত দাশ জানান, অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে, সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে বিভাগ বাছাই করা যেত।
এদিকে রাজধানীর সেইন্টফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্লস হাইস্কুলে কর্তৃপক্ষ আগামী ১২ জানুয়ারি একইভাবে একই কারণে পরীক্ষা নেবে। পরীক্ষা নেয়ার খবর শুনে প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
শিক্ষা প্রশাসনের দৃষ্টি এড়াতে খ্রিষ্টান চার্চ পরিচালিত এই স্কুল কর্তৃপক্ষ ভিন্ন কৌশল নিয়েছে। তারা ওইদিন স্কুলড্রেস ছাড়া সাধারণ পোষাক পরে নবম শ্রেণির ছাত্রীদের স্কুলে যেতে বলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাকে বলেছেন, যারা কোচিং করে তারাই আগে থেকেই জানে কি প্রশ্ন আসতে পারে।
বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান দৈনিক শিক্ষাকে বলেছেন, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সব পদে আসীন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ ও স্কুলের শিক্ষকরা। আর সরকারি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকরা বিসিএস ক্যাডারভুক্ত শিক্ষক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার পরিচালক ও উপপরিচালক। কারণ, তারা সবাই একই ক্যাডারের।
তিনি বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী অপরদিকে খ্রিষ্টান মিশনারি পরিচালিত স্কুল-কলেজগুলো অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা ভোগ করে। তাই তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের খুব একটা পাত্তা দেননা। এভাবে স্বজন ও ক্ষমতাপ্রীতি করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যায় না।