নো মাস্ক নো স্কুল, ক্লাস হবে শিফটে : দুশ্চিন্তায় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান - দৈনিকশিক্ষা

নো মাস্ক নো স্কুল, ক্লাস হবে শিফটে : দুশ্চিন্তায় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা পেয়ে  শনিবার থেকে স্কুল-কলেজে শুরু হয়েছে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। বন্ধ থাকা ক্লাসরুম, ধুলা পড়া ব্ল্যাকবোর্ড আর প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় চলছে ধোয়া-মোছার কাজ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতির খবরে ঘরবন্দি শিক্ষার্থীরাও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। তারা দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চায়।

 এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দৃশ্যমান স্থানে ‘নো মাস্ক নো স্কুল’ নির্দেশনা টাঙাতে বলা হয়েছে। শুক্রবার রাতে প্রকাশিত ৩৯ পাতার নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে- সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে থেকে পুনরায় চালু হবে তা সরকার ঘোষণা করবে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারবে কি না, স্কুল চালু রাখলে ওই এলাকার সংক্রমণ বাড়িয়ে দিতে পারে কি না সেটিও বিবেচনায় আনতে হবে।

মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই এটি নিশ্চিত করতে হবে। এরপর সরকারের সিদ্ধান্ত পেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। স্কুল-কলেজ খোলার আগে সরকারের পরিকল্পনায় ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালুর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের (শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় স্বাস্থ্য ও প্রশাসন এবং কমিউনিটি) সম্পৃক্ত করতে বলা হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে আনন্দঘন শিখন পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবস্থান, প্রাতিষ্ঠানিক ও আর্থিক সক্ষমতা, জনবল ও দক্ষতা ইত্যাদি বিবেচনায় বাস্তবসম্মতভাবে নির্দেশনা প্রণয়ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, স্টাফ ও সংশ্লিষ্ট সবার সর্বদা মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দৃশ্যমান স্থানে ‘নো মাস্ক নো স্কুল’ নির্দেশনা টাঙাতে হবে। শারীরিক দূরত্ব মেনে শ্রেণিকক্ষ ও প্রতিষ্ঠানের চত্বরে খোলা জায়গায় ১ মিটার বা ৩ ফুট দূরত্বে শিক্ষার্থীদের বসার ব্যবস্থা করতে হবে। এমনকি বেঞ্চে বসার ক্ষেত্রেও ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যক্রমে নির্দেশিত শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর প্রথম দুই মাসের মধ্যে কোনোরকম আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা বা মূল্যায়ন করা যাবে না। শিক্ষার্থীদের ওপর যাতে কোনো প্রকার মানসিক চাপ সৃষ্টি না হয় এ বিষয়টি মাথায় রেখে পরিকল্পনা করতে হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পুরো এলাকা জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্টাফদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের জন্য কন্টাক্টলেস থার্মোমিটার স্থাপন করতে হবে। ৬ থেকে ১১ বছরের শিক্ষার্থীদের জন্য রোগবিস্তারের ঝুঁকির ওপর নির্ভর করে মাস্ক ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী ১২ বছরের বেশি সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে। প্রতি ৩০ জন ছাত্রীর জন্য একটি টয়লেট ও ৬০ জন ছেলের জন্য একটি টয়লেট নিশ্চিতের চেষ্টা করতে হবে। শিক্ষক/কর্মচারী, ছাত্র ও ছাত্রী এবং প্রতিবন্ধীদের পরিচ্ছন্ন পৃথক টয়লেটের পরিকল্পনা করতে হবে। প্রতিটি টয়লেটে পানি, সাবানসহ অন্য স্যানিটারি সরঞ্জাম সরবরাহের পরিকল্পনা করতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য স্বাস্থ্যবিধি, শারীরিক দূরত্বের বিধি, হাত ধোয়ার সঠিক নিয়ম, মাস্ক পরার নিয়ম, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচারে প্রশিক্ষণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে নির্দিষ্ট সময় পর পর নিয়ম মেনে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া ও পরিষ্কারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার পালন করা ও উৎসাহিত করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেঝেসহ সব এলাকা প্রতিদিন নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত পানি, স্যানিটেশন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুবিধা রাখা এবং পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখার পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থাকাকালীন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারীর মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা গেলে তাদের আলাদা কক্ষে রাখতে হবে। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত এটি নিশ্চিত করতে হবে। সমস্যা দেখা দিলে তাদের চিকিৎসাসেবা দিতে হবে। দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের তালিকা করে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগেই স্কুলের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। পাঠদানের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সব ছাত্র-ছাত্রীকে আনা সম্ভব না হলে একসঙ্গে এক শিফটে কতজন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনা সম্ভব, আসন ব্যবস্থা কেমন হবে ছাত্র-ছাত্রীদের, সে ব্যাপারে পরিকল্পনা করতে বলা হয়েছে। শিক্ষার্থীর চাহিদা বিবেচনায় ও অভিভাবকদের মতামতের ভিত্তিতে এবং ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী কারা প্রতিষ্ঠানে আসবে আর কারা বিকল্প উপায়ে বা দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নেবে সে ব্যাপারে পরিকল্পনা করতে হবে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষা কার্যক্রম একই সঙ্গে চালু করতে কতটি শিফট প্রয়োজন এবং প্রতিটি শিফটের জন্য কত কর্মঘণ্টা প্রয়োজন তা নির্ধারণ করতে হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের।

এদিকে রাজধানীর বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে। যদি এখনই খুলে দেওয়া হয়, তাহলে রাজধানীর বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি বজায় রাখা যাবে না। কারণ কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে ২৮ থেকে ৩০ হাজার ছাত্রছাত্রী। এসব প্রতিষ্ঠানের রয়েছে একাধিক ক্যাম্পাস। খোদ প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভায় স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হলেও এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না তারা। আশঙ্কা ভর করেছে অভিভাবকদের মনেও।

জানা গেছে, রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ২৮ হাজার ছাত্রী। বেইলি রোডের মূল ক্যাম্পাস ছাড়াও রাজধানীর ধানমন্ডি, আজিমপুর ও বসুন্ধরায় তাদের আরও তিনটি ক্যাম্পাস। খ্যাতনামা অপর প্রতিষ্ঠান মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের রয়েছে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী। কলেজ শাখা শুধু মেয়েদের। মতিঝিলের মূল ক্যাম্পাস ছাড়াও বনশ্রী ও মুগদায় তাদের আরও দুটি শাখা ক্যাম্পাস রয়েছে। মিরপুরে মনিপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজারের কাছাকাছি। মনিপুরে মূল বালক ও মূল বালিকা শাখা ছাড়াও রূপনগর, শেওড়াপাড়া ও ইব্রাহীমপুরে তিনটি শাখা ক্যাম্পাস রয়েছে। ভর্তির চাপ থাকায় করোনার আগে এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলোতেই একাধিক সেকশন এবং প্রতিটি সেকশনে আবার ঠাসাঠাসি, গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হয়। এখন এসব প্রতিষ্ঠানে কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে, তা নিয়ে খোদ শিক্ষকরাই অনেকে দুশ্চিন্তায়।

এ বিষয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, কোনোভাবেই গাদাগাদি বা ঠাসাঠাসি করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করার সুযোগ নেই। আমরা বলে দিয়েছি, প্রতিটি বেঞ্চ ৫ ফিট দূরত্বে বসাতে হবে। আর সব শিক্ষার্থীকে একই দিনে ক্লাসে আসতে হবে না। কোন ক্লাসে কাদের কবে আসতে হবে তা আমরা শিগগিরই জানিয়ে দেব। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঠিক কবে প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনও তারা কোনো চূড়ান্ত নির্দেশনা পাননি সরকারের কাছ থেকে।

মাউশির সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-১) আমিনুল ইসলাম টুকু জানান, শুক্রবার নির্দেশনা দেওয়ার পর শনিবার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানপ্রধানরা বিদ্যালয়ে জোরেশোরে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করেছেন।

মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ হাফিজুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা শ্রেণিকক্ষ পরিস্কার কাজ শুরু হয়েছে। তিনি জানান, তার প্রতিষ্ঠানে কলেজ শাখা পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী। তিনি ভাবছেন যে একটি শ্রেণিকক্ষে ২০ জনের বেশি বসাবেন না। ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিন জানান, পুরো বিদ্যালয় ক্যাম্পাস পরিস্কার কাজ হচ্ছে। তারা ছাত্রদের আসার অপেক্ষায়। রূপনগর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কামরুন নাহার চৌধুরী বলেন, তিনি একটু আগেভাগেই বিদ্যালয় পরিস্কার করে রেখেছেন। ছাত্ররা আসছিল, ভর্তি হচ্ছিল, বই দিচ্ছিলেন। এবার পুরোপুরি খুলে দিলেই তিনি ক্লাস শুরু করতে পারবেন।

স্কুল খোলার প্রস্তুতি হিসেবে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে উৎসাহের সঙ্গেই অংশ নিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের পরিচ্ছন্নতাকর্মী নীল মণি কান্ত বিশ্বাস বলেন, ভালো লাগছে, আবার স্কুল জমজমাট হয়ে উঠবে। খুশি শিক্ষকরাও।

তবে একসঙ্গে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিপক্ষে বিশেষজ্ঞরা। বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান  বলেন, অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। তবে তা ধাপে ধাপে। একসঙ্গে সব বা আগে শহরাঞ্চলের প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া ঠিক হবে না। আর অন্তত দুই সপ্তাহ প্রস্তুতি নিয়ে তা খুলতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেবল নয়, এটি খোলার সঙ্গে অভিভাবক, প্রতিটি পরিবার ও প্রতিটি শিক্ষকও সমভাবে জড়িত। তিনি বলেন, প্রতিটি উপজেলা ও শহরে সার্ভেইল্যান্স টিম গঠন করতে হবে। যেন খোলার পর কোনো সমস্যা তৈরি হলে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

মাউশির নির্দেশনা: শুক্রবার রাতে সারাদেশের স্কুল-কলেজপ্রধানদের একটি নির্দেশনা পাঠায় মাউশি। সেখানে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্কুল-কলেজ খোলার জন্য প্রস্তুতির নির্দেশ দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে একটি গাইড লাইনও দেওয়া হয় এ নোটিশের সঙ্গে।

গাউড লাইনে বলা হয়, তিন ফুট দূরত্বে ক্লাসরুমের বেঞ্চগুলো স্থাপন করতে হবে। পাঁচ ফুটের কম দৈর্ঘ্যের একটি বেঞ্চে একজন শিক্ষার্থী এবং পাঁচ থেকে সাত ফুট দৈর্ঘ্যের বেঞ্চে দু'জন শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাইড লাইন অনুসারে ক্লাস করতে পারবে। স্কুলে ঢোকার আগেই থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হবে।

কভিড-১৯ বিস্তার রোধে প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের সময় সবার স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, শিক্ষার্থীরা যাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলাফেরা করতে পারে এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থারও পরিকল্পনা নিতে হবে। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের যে মানসিক চাপ তৈরি হয়েছে তা থেকে মুক্ত করার জন্য নিরাপদ ও আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের পরিকল্পনা নেওয়ারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা: করোনার কারণে ১৭ মার্চ থেকে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বন্ধ রয়েছে সারাদেশের ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও। কবে এসব প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে যখনই খুলে দেওয়া হোক না কেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বেঁধে দেওয়া শর্তাবলি প্রতিপালন করে বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার জন্য একটি পরিকল্পনা (স্কুল রি-ওপেনিং প্ল্যান) তৈরি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ১৮ আগস্ট এই পরিকল্পনা জারি করেছে এ মন্ত্রণালয়। এতে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, স্কুল খুলে দেওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালিত হবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুখে মাস্ক পরা, হাত পরিস্কার ও থার্মোমিটার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। আগের মতো প্রতিদিন সব বিষয়ের ক্লাস হবে না। কবে কোন বিষয়ের ক্লাস হবে তা শিক্ষক ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির (এসএমসি) সদস্যরা বসে নির্ধারণ করবেন।

এ পরিকল্পনায় রয়েছে, বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। স্কুলের গেটে বা প্রবেশের স্থানে হাত ধোয়ার জন্য সাবান ও পানির ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করবে। থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মেপে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ করানো হবে।

পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, আগের মতো ক্লাসে এক বেঞ্চে তিন বা চারজন শিক্ষার্থী বসতে পারবে না। দূরত্ব বজায় রেখে পাঠদান করা হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এক বেঞ্চে দু'জন শিক্ষার্থীকে বসাতে হবে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আগের মতো আর সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস হবে না। একটি স্তরে সপ্তাহে দুই বা তিন দিন অথবা প্রতিদিন দুই-তিনটি ক্লাস নেওয়া হবে। তবে ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে চতুর্থ শ্রেণিকে অধিক গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্যক্রম নির্বাচন করে কোন দিন কোন বিষয়ের ক্লাস নেওয়া হবে তা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও এসএমসির সদস্যদের নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।

বিদ্যালয় চলাকালে করণীয় হিসেবে এ পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ে আসতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক মুখে মাস্ক পরে আসতে হবে। বিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে ভিড় করে খেলাধুলা, আড্ডা-গল্প করতে পারবে না। সামাজিক দূরত্ব রেখে হাঁটাচলা করতে হবে। নোটিশ বোর্ডে বিদ্যালয় শিক্ষক, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যোগাযোগ নম্বর লিখে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় তাকে চিকিৎসা দিতে বলা হয়েছে।

 

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার - dainik shiksha ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার - dainik shiksha ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি ছাত্রীর আত্মহত্যা: শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার অবন্তিকার আত্মহত্যা: সাতদিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্নের আশ্বাস জবি উপাচার্যের - dainik shiksha অবন্তিকার আত্মহত্যা: সাতদিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্নের আশ্বাস জবি উপাচার্যের হয়রানির প্রতিকার চেয়েও ফল পাননি অবন্তিকা, অভিযোগ মায়ের - dainik shiksha হয়রানির প্রতিকার চেয়েও ফল পাননি অবন্তিকা, অভিযোগ মায়ের নতুন শিক্ষাক্রম: শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে মিলছে না মূল্যায়ন - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম: শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে মিলছে না মূল্যায়ন মূল্যায়ন বুঝলেও নৈপুণ্য অ্যাপে চ্যালেঞ্জের মুখে শিক্ষকরা - dainik shiksha মূল্যায়ন বুঝলেও নৈপুণ্য অ্যাপে চ্যালেঞ্জের মুখে শিক্ষকরা ‘পড়তে ও লিখতে’ শেখা প্রকল্প কেনো - dainik shiksha ‘পড়তে ও লিখতে’ শেখা প্রকল্প কেনো please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036680698394775