সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন বলেছেন, করোনা কবে যাবে তা কেউ বলতে পারে না। করোনা দ্বিতীয় ওয়েভ সম্পর্কে সরকারের কাছে নিশ্চয়ই তথ্য রয়েছে যার ভিত্তিতে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই হিসেবে মন্দের ভালো হয়েছে সিদ্ধান্তটা। দৈনিক শিক্ষাকে দেয়া সাক্ষাতকারে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, তবে, প্রশ্ন উঠেছে কয়েকটি। আমাদের দেশেই তো ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থীরা পাবলিক পরীক্ষা দিচ্ছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে না কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা তো হবে। তাহলে কি হলো? উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পরীক্ষা ছাড়া মূল্যায়নের ফল নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে এবারের পরীক্ষার্থীদের।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে যারা এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলো তারা একলাখ চার হাজার জিপিএস ফাইভ পেয়েছিলো। আর পাসের হার ছিল ৮০ শতাংশ। তারাই যখন ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলো তখন জিপিএ ফাইভের সংখ্যা কমে ৪৭ হাজারে নামলে এবং সার্বিক পাসের হারও কমে ৭৩ শতাশেং নেমেছিলো। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দেে এসএসসিতে পাসের হার ছিলো ৭৭ শতাংশ। এক লাখ দশ হাজার জিপিএ ফাইভ পেয়েছিলো। তারাই এবার উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী ছিলো। দেখুন পরিসংখ্যানটা। তাহলে মেধার মূল্যায়নটা কিভাবে জাস্টিফাইড হবে?
এহছানুল হক মিলন বলেন, অটো পাস কোনো যুক্তিতেই হতে পারে না। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দেও এমন অটো পাসের ব্যবস্থা করা হয়। তখন থেকেই শুরু হয় নকল প্রবণতা। তার খেসারত জাতি দিচ্ছে। তিনি বলেন, যে দেশে করোনাকালীন নির্বাচন হয়, সে দেশে পরীক্ষা হতে পারবে না কেন? পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপকেন্দ্র বাড়িয়ে দিতেন। এক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষককে অন্য প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব দেওয়া যেত। সংসদের উপনির্বাচন হচ্ছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হচ্ছে, তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নিতে বাধা কোথায়? বলা হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই ব্যবস্থায় তো পরীক্ষা নেওয়া হলো না। তাহলে কোথায় ডিজিটাল বাংলাদেশ? আর যদি আগের ফলাফলের মূল্যায়নেই পরীক্ষা নেন, তাহলে এপ্রিলে কেন এটা করেননি? তাহলে এই বিড়ম্বনা কেন করলেন?