যশোর সরকারি এমএম কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের পরীক্ষার্থী অলিউল রহমান শুভ ও শারমিন আক্তার রেশমা। দুজনের শ্রেণি রোল ৪৭৬ ও ৪৭৭। তাদের বাড়ি একই জেলায়।
গত বুধবার পরীক্ষা শেষে একই বাসে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। পথিমধ্যে ঝিনাইদহের বারোবাজারে বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তারা। তাদের রোল ছিল পাশাপাশি, পরপারেও চলে গেলেন। একসঙ্গে তাদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
অলিউল রহমান শুভ চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদহ গ্রামের জান্নাতুল বিশ্বাসের ছেলে ও শারমিন আক্তার রেশমা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দিংদহ গ্রামের আবদুর রশিদের মেয়ে।
গত বুধবার পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ঝিনাইদহের বারোবাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন তারা। এই মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছে তাদের আরও চার সহপাঠী। ওই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১২ জনের ছয়জনই যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্স বর্ষের পরীক্ষার্থী।
একটি দুর্ঘটনা নিহতদের পরিবারে বয়ে এনেছে সারাজীবনের কান্না। এদের মধ্যে ছয় শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে পরিবারের। একে একেকজনের স্বপ্ন ছিল পড়াশুনা শেষ করে পরিবারের হাল ধরা। কেউ কেউ পরিবারের হাল ধরেও ছিল। কিন্তু নানা রঙের স্বপ্নে রঙিন দিনগুলো নিমেষেই নিঃশেষ হয়ে গেল।
প্রিয়জনের চিরবিদায়ে শোকে বিহ্বল পরিবার, স্বজন বন্ধুরা। সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই কারো। একই কলেজের ছয় শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যুতে শিক্ষক, শিক্ষার্থীরাও শোকাহত।
নিহত ছয় শিক্ষার্থী হলেন-মাস্টার্সের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নাথকুণ্ডু গ্রামের ওয়াহেদ আলীর ছেলে ইউনুস আলী, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বড় ভাটপাড়া গ্রামের রণজিত কুমার দাসের ছেলে সনাতন কুমার দাস, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার হরিনদিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে হারুন অর রশিদ।
মাস্টার্সের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দিংদহ গ্রামের আবদুর রশিদের মেয়ে শারমিন আক্তার রেশমা ও চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদহ গ্রামের জান্নাতুল বিশ্বাসের ছেলে অলিউল রহমান শুভ এবং মাস্টার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের মুস্তাফিজুর রহমান কল্লোল।
সরকারি এমএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুল মজিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বুধবার মাস্টার্সের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা এলাকার শিক্ষার্থীরা বাসে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে বারোবাজারে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এই দুর্ঘটনায় আমাদের কলেজের ছয়জন শিক্ষার্থী নিহতের খবর পেয়েছি। আহত হয়েছেন আরও ১০-১২জন। আহতদের মধ্যে চারজন চিকিৎসাধীন আছে।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়েই বুধবার নিহতদের বাড়িতে গিয়েছি। পারিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিয়েছি। তাদের সৎকারে আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। একই সঙ্গে কলেজের উদ্যোগে আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ সবসময় তাদের পাশে আছে। নিহতদের স্মরণে শনিবার কলেজ মসজিদে দোয়া মাহফিল হবে। পরবর্তীতে স্মরণসভার আয়োজন করা হবে।
অধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুল মজিদ বলেন, একটি দুর্ঘটনায় এত সংখ্যক শিক্ষার্থী মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। নিহতের পরিবারের সান্তনা দেয়ার কোন ভাষা নেই।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।