সরকারি সিদ্ধান্তের সঙ্গে সংগতি রেখে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষে চলমান সব ধরনের পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে মানববন্ধন, সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ভাস্কর্য চত্ত্বরে একটি সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। পরে ক্যাম্পাস এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর উজ্জল কুমার প্রধান বিষয়টি নিয়ে ভিসির সঙ্গে আলোচনা করে আশানুরুপ সমাধানের আশ্বাস দিলে শনিবার পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রাখেন আন্দোলনকারীরা। তবে সুষ্ঠ সমাধান না পেলে লাগাতর আন্দোলনের ঘোষণাও দেন তারা
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, নির্বাচন, অফিস, আদালত, কলকারখানা, দোকানপাট ও যানবাহনসহ সবকিছুই ঠিকঠাক চললেও করোনা ভাইরাসের দোহাই দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ থাকবে? তারা আরো বলেন, আমাদের দাবি একটাই, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে, ক্লাস পরীক্ষা চলবে। দাবি না মানলে আমরা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাব।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১ তম একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে হিসাবরক্ষণ বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বিভাগের স্মাতক ও স্মাতকোত্তরের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়। এরপর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২তম একাডেমিক কাউন্সিলে সকল বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। হল বন্ধ থাকায় পরীক্ষায় অংশ নিতে ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকার মেসগুলোতে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। চলছিল পরীক্ষাও। ২২ ফেব্রুয়ারি সরকারের পক্ষ থেকে আগামী ১৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হল খোলা এবং ২৪ মে সরাসরি শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুর ৩ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩তম জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলের ভার্চুয়ালি সভায় চলমান সব ধরনের পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এএইচএম মোস্তাফিজুর রহমান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবির জানান, সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর যথারীতি ক্লাস-পরীক্ষা চালু হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এএইচএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ আছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩তম জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলের ভার্চুয়ালি সভায় সব ধরনের পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা তো সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে ক্লাস-পরীক্ষা নিতে পারি না।