কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী দিলীপ চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ সরকারি বই বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দিলীপ চন্দ্র রায় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিতেন্দ্রনাথ রায়ের ছোট ভাই। বই বিক্রির অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির (পরিচালনা পর্ষদ) জরুরি বৈঠকে দিলীপ চন্দ্র রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা জানান, গত মঙ্গলবার রাতে পাঁচগাছী উচ্চ বিদ্যালয়ের ফটকের সামনে ভাঙ্গারির দোকানের মালিক আরিফুল ইসলামের কাছে ১ হাজার ৬৫০ টাকায় প্রায় দুই মণ বই বিক্রি করে দেন অফিস সহকারী দিলীপ চন্দ্র রায়। এলাকার লোকজন এ ঘটনা জানতে পেরে বইগুলো উদ্ধার করে বন্দরপাড়ার আমিনুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে জমা রাখেন। এ খবর পেয়ে গত বুধবার দুপুরে সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও) সাজ্জাদ হোসেন আমিনুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে বইগুলো জব্দ করেন।
জানা গেছে, পাঁচগাছী উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী দিলীপ শিক্ষার্থীদের জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরে বরাদ্দ করা ৭৮ কেজি বই বিক্রি করেন। এ খবরে ক্ষুব্ধ বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বছর প্রায় শেষ, কিন্তু আমি এখনো ক্লাসের ৩টি বই পাইনি। অথচ আমার পড়ার বই বিক্রি করে খাচ্ছে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অফিস সহকারী দিলীপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমি আসলে বুঝতে পারিনি। এক বছর হলো চাকরিতে আসার। আমি ভুল করছি। আসলে ৭৮ কেজি না, ২২-২৩ কেজি বই ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি।’
নিজের ভাইয়ের বিরুদ্ধে ওঠা বই বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পাঁচগাছী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। গত বুধবার এটিও মহোদয় আসেন অন্য একটা কাজে। আমি বিদ্যালয়ে এসে শুনলাম স্কুলের অফিস সহকারী বই বিক্রি করেছে। এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এটিও মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সবকিছু জেনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করে প্রতিবেদন দেব।’