পাবনা জেলা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন মাসুদ রানা। তিনি চরভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। প্রাথমিক শিক্ষা পদকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মধ্যে সহকারী শিক্ষক হিসেবে পাবনা সদর উপজেলা শ্রেষ্ঠত্বের পর এবার পাবনা জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ হবার গৌরব অর্জন করেছেন তিনি।পাবনার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র হালদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, পাবনার সব উপজেলার শ্রেষ্ঠদের মধ্য একাডেমিক ফল, শিক্ষকতার সময়কাল, প্রকাশনা, গবেষণা প্রবন্ধ, শ্রেণিপাঠদানে পারদর্শীতা, শিখন শেখানোর কৌশল দক্ষতা,প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ, যোগ্যতাভিত্তিক পাঠদান, প্রশ্ন প্রণয়ন ও অন্যান্য বিশেষ কৃতিত্বের প্রমাণকের বিশ্লেষণ করে জেলা প্রশসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও জেলা কমিটির সদস্যরা তাকে জেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক নির্বাচিত করেছেন।
পাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র হালদার বলেন, জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন মাসুদ রানা। তিনিসহ যারা বিভিন্ন পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন সবার জন্য শুভ কামনা ও অভিনন্দন। বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের আরও ভালভাবে পাঠদান করে তারা প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশু সন্তানদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন সে আহ্বান জানাচ্ছি।
শ্রেষ্ঠ শিক্ষক মাসুদ রানা বলেন, দায়িত্ব কর্তব্য আরও বেড়ে গেলো। আগেও যেমন শিক্ষকদের দক্ষতা ও মান বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছি তা অব্যহত রাখবো। শিক্ষার্থীদের প্রতি আন্তরিক ও পাঠদানে বিশেষ কৌশলগুলো প্রয়োগে কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জন সম্ভব।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর পাবনা সদর উপজেলা বাছাই কমিটি মাসুদ রানাকে সদর উপজেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক ঘোষণা করেন। এরপর জেলায় প্রাথমিক শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
তার এ কৃতিত্বে সন্তোষ প্রকাশ করে তাকে অভিবাদন জানিয়েছেন বাংলাদেস প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহীনুর আল-আমিনসহসংগঠনের কেন্দ্রীয়, জেলা উপজেলা পর্যায়ের নেতারা।
জানা গেছে, মাসুদ রানা ইংরেজিতে সম্মান ও স্নাতকোত্তর এবং ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন ডিগ্রি নিয়েছেন। তিনি ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে পাবনা শহর থেকে সড়কপথে প্রায় ৮৭ কিলোমিটার দূরের দূর্গম চর চরভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন।
মাসুদ রানা আরও জানান, প্রয়োজনীয় শিক্ষক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন পেলে চরের বুকে আধুনিক শিক্ষার বাতিঘর বানানোর প্রত্যাশা রয়েছে তার। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতাও তার রয়েছে। করোনার সময়ে প্রাথমিক শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে ব্লেন্ডেড লার্নিং ও টিচিংয়ে তিনি গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আইসিটি সম্পর্কিত নানা বিষয়ে সারাদেশের শিক্ষকদের তিনি অনলাইনে সহযোগিতা করেছেন।
জানা গেছে, মাসুদ রানা চার ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয়। তার দুইবোন উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন ও ছোট ভাই আইন শিক্ষানবিশ। তিনি সবার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও দোয়া প্রার্থনা করেছেন যাতে শিক্ষার মানোন্নয়নে এ সাফল্যকে কাজে লাগিয়ে পাবনার মুখ উজ্জ্বল করতে পারেন।