পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনিশ্চিত - দৈনিকশিক্ষা

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনিশ্চিত

নিজস্ব প্রতিবেদক |

২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অটোপাসের ফল এ বছরের ৩০ জুলাই প্রকাশ করা হয়। এরপর পার হয়েছে ছয় মাস। প্রায় ১৪ লাখ ভর্তিচ্ছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখতে সেই থেকে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেও তা এক দফা পিছিয়ে দিয়েছে। নতুন করে ফের তারিখ ঘোষণা করা হলেও নির্ধারিত দিনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব কিনা, তা উপাচার্যরাই জানেন না। তারা তাকিয়ে আছেন বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে। এমন অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সম্মান প্রথম বর্ষে ভর্তির পরীক্ষা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

সঠিক সময়ে এইচএসসি পরীক্ষা, ফল প্রকাশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হলে এই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের গত বছর ডিসেম্বর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হতো। উপাচার্যদের কয়েকজন জানান, করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষা আটকে রয়েছে। এই পরীক্ষাগুলো নিতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি ব্যাচ বেরিয়ে যেত। এরপর প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করা যেত। এখন সব কিছু আটকে গেছে। ভর্তি পরীক্ষা নিতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন প্রথম বর্ষ বলে কিছু নেই। একাডেমিক ক্যালেন্ডার ওলটপালট হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

কয়েকজন উপাচার্যের বক্তব্যে ভর্তি পরীক্ষা আরও পিছিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। তারা জানান, এখন স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষার দিকেই তারা বিশেষ জোর দিচ্ছেন। আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকাদান সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হলে প্রথমেই তারা আটকে থাকা একাডেমিক পরীক্ষাগুলো শেষ করবেন।

একজন উপাচার্য জানান, অতিমারি পরিস্থিতিতে সশরীরে না নিয়ে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টিও তারা ভেবেছিলেন। এজন্য উপাচার্যদের সংগঠন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের পক্ষ থেকে একটি কমিটিও করা হয়। তবে নানা পর্যালোচনা শেষে তারা সিদ্ধান্তে এসেছেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লাখ লাখ ভর্তিচ্ছুর পরীক্ষা এভাবে অনলাইনে নেওয়া সম্ভব নয়। এতে ভর্তি পরীক্ষার স্বচ্ছতা শতভাগ বজায় রাখার নিশ্চয়তা মিলবে না। এ কারণে তারা সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের হার বাড়তে থাকায় দেশের পুরোনো ও বড় সব বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পিছিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ৩১ জুলাই চারুকলা অনুষদভুক্ত 'চ' ইউনিটের তত্ত্বীয় পরীক্ষার মধ্য দিয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু করার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভর্তির আবেদন গ্রহণ শেষে গত ১০ জুন পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তা স্থগিত করা হয়। প্রাক-নির্বাচনী ও চূড়ান্ত ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ১০ দিন আগে জানানো হবে বলে জানানো হয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন গ্রহণ চলছে। এখনও তারা ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ২০ আগস্ট থেকে এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ১৬ আগস্ট থেকে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। গুচ্ছভুক্ত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদন গ্রহণ গত ২৫ জুন শেষ হয়েছে। মোট তিন লাখ ৬১ হাজার আবেদন পড়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে আবেদন পড়েছে এক লাখ ৯২ হাজার। সর্বোচ্চ দেড় লাখ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে পারবে তারা। প্রাথমিক বাছাই শেষে বাকি শিক্ষার্থীরা বাদ পড়বেন। সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৪ সেপ্টেম্বর এবং তিনটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার নতুন তারিখ আগামী ১২ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।

যেসব বিশ্ববিদ্যালয় জুলাইয়ের শেষে বা আগস্টের শুরুতে পরীক্ষা নিতে চেয়েছিল, তাদের ভর্তি পরীক্ষার তারিখও এখন পেছাতে হবে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির আবেদন গ্রহণ করলেও এখনও পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেনি।

গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতির আওতায় আসা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। এ বিষয়ে শিগগিরই কমিটির সভায় বসে নতুন সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কমিটির সদস্য সচিব ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, গুচ্ছ পরীক্ষা নিয়ে আপাতত নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেই। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো সিদ্ধান্তে যেতে পারছি না। তবে খুব শিগগিরই সবাইকে নিয়ে একটি অনলাইন সভা ডাকা হবে। সেখানে কোনো সিদ্ধান্ত এলে জানিয়ে দেওয়া হবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037739276885986