পেনশন নীতিমালা তৈরিতে বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয় সাড়ে ৭ লাখ টাকা - দৈনিকশিক্ষা

পেনশন নীতিমালা তৈরিতে বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয় সাড়ে ৭ লাখ টাকা

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি |

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পেনশন ও ভবিষ্যত তহবিল নীতিমালা সংশোধন এবং অনুমোদনের জন্য ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার ব্যয় দেখানো হয়েছে। এমনকি রিজেন্ট বোর্ড এবং অর্থ কমিটির অনুমোদন ছাড়াই এই সম্পূর্ণ অর্থ অগ্রীম প্রদান করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বশেমুরবিপ্রবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং পেনশন ও ভবিষ্যত তহবিল নীতিমালা কমিটির সদস্য সচিব গোলাম হায়দারকে এই অর্থ প্রদান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২ জানুয়ারির অর্থপ্রাপ্তির আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘নীতিমালা সংশোধন, সারসংক্ষেপ তৈরি এবং নীতিমালা দুইটি অনুমোদনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিবসহ তাদের দপ্তরের কর্মকতা ও কর্মচারীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিবসহ তাদের দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী এবং অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত কমিটির সদস্যদের তাদের প্রাপ্ত বেতনের বেসিক অনুযায়ী একটি করে বেসিক সম্মানী হিসেবে পাওয়ার দাবীদার।’

আবেদনপত্রে এই হিসেব অনুযায়ী আনুষঙ্গিক খরচসহ মোট সাত লাখ টাকার নথি পেশ করা হয়। নথিতে দেখা যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, একজন যুগ্ম সচিব এবং সাতজন কর্মকর্তা কর্মচারীসহ মোট নয়জনকে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৪৩০ টাকা দেয়ার তালিকা দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) মো: আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরীকে ৭৬ হাজার ৪৯০ টাকা, যুগ্মসচিব (বৃত্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা) সৈয়দ আলী রেজাকে ৬৩ হাজার ৫৭০ টাকা, বৃত্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: আবুল কালাম আজাদকে ২০ হাজার ৪৪০ টাকা, কম্পিউটার অপারেটর হামিদা মুক্তিকে ১২ হাজার ৭৪০ টাকা, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক চায়না আক্তারকে ১১ হাজার ৩২০ টাকা, অফিস সহায়ক জান্নাতুল ফেরদৌসকে ১৫ হাজার ৯৬০ টাকা, অতিরিক্ত সচিবের (বিশ্ববিদ্যালয়) দপ্তরের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলামকে ৩৪ হাজার ১০ টাকা এবং অফিস সহায়ক মো: আসাদকে ১৩ হাজার ৯০০ টাকা দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

আবেদনপত্র অনুযায়ী, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২ জানুয়ারি ভর্তি কোর কমিটির ৬ জন সদস্যের অনুমোদন নিয়ে তৎকালীন উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি তহবিল থেকে বর্ণিত ব্যয়ভার বহনের জন্য অনুমোদন করেন। তবে এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কমিটির অনুমোদন নেয়া হয়নি এবং অর্থ কমিটির অনুমোদন ছাড়াই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম গোলাম হায়দারকে একইদিনে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম প্রদান করা হয়।

এ বিষয়ে পেনশন ও ভবিষ্যত তহবিল কমিটির সদস্য সচিব এস এম গোলাম হায়দার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কমিটির সকলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টাকাটা আমার নামে দেয়া হয়েছিলো। তবে তালিকায় উল্লেখিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং যুগ্ম সচিবকে এখনও কোনো টাকা দেয়া হয় নি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা কমিটিতে ছিলেন তাদের মধ্যে ৩-৪ জন ছাড়া আর কেউ এখনও টাকা গ্রহণ করেননি।

তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, আমরা এখনও অর্থ সমন্বয় করিনি, এর মধ্যে কেউ টাকা ফেরতও দিতে পারে। 

তবে এস এম গোলাম হায়দার কমিটির সকলের সিদ্ধান্তে অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে দাবি করলেও এই বক্তব্যের সাথে দ্বিমত জানিয়েছেন কমিটির সদস্য এবং মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি তাপস বালা। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অর্থ উত্তোলন করা হবে এ বিষয়ে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি, এমনকি এ বিষয়ে অর্থ উত্তোলনের পূর্বে কোনো মিটিংয়েও আমাকে ডাকা হয়নি।

এ বিষয়ে তৎকালীন উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) এবং পেনশন ও ভবিষ্যত তহবিল কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: শাহজাহান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, টাকাটা অগ্রিম তোলা হয়েছিলো এবং পরবর্তীতে সমন্বয় করার কথা ছিলো। এছাড়া কথা ছিলো অর্থ কমিটির অনুমোদন পেলে টাকাটা বিতরণ করা হবে।

তবে আবেদনপত্রে অর্থ কমিটির অনুমোদনের শর্ত সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক আবু তাহের দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কোনো কমিটি গঠন করা হলে কমিটির মিটিং আয়োজনের জন্য কিছু পরিমাণ অর্থ প্রদান করা হয় তবে সেই অর্থের পরিমাণ এত বড় অঙ্কের হয় না। এছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে নীতিমালা তৈরি এবং অনুমোদনের পর সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্যদের একটি সম্মানি দেয়া হয়। তবে সেটি অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী রিজেন্ট বোর্ড, অর্থ কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হতে হয়। এখানে যে কারণ দেখিয়ে যে পদ্ধতিতে অর্থ নেয়া হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত।

এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কিউ. এম মাহবুব দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি বিষয়টা সম্পর্কে ইতোমধ্যে জেনেছি। এখানে কিছু নিয়মের ব্যতয় ঘটেছে। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0071220397949219