যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই অধ্যাপকের কাছে মারপিটের শিকার যবিপ্রবির নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদুৎ) মিজানুর রহমান মামলাটি করেছে। বুধবার যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন তিনি।
মামলায় বলা হয়েছে, গত ২৫ জুন শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেন তিনি। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী আজিজুল ইসলাম (যবিপ্রবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম রিয়াদ হত্যা মালার আসামী) প্রশিক্ষণস্থলে গিয়ে তাকে বলেন অনুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইকবাল কবীর তাকে ডাকছেন। এরপর তিনি কর্মশালায় তার মত আরেক অংশগ্রহণকারী সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) শাহিন হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে গ্যালারির বাইরে বের হয়ে আসেন। আর বাইরে সাথে সাথে ড. ইকবাল কবির জাহিদ তার কলার ধরে টানতে টানতে গ্যালারি সংলগ্ন পশ্চিম পাশের ওয়াশরুমের সিঁড়ির নিচে টেনে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে গিয়ে তার ডান কানে স্বজোরে একটি থাপ্পর মেরে জিজ্ঞেস করেন-বার বার নির্দেশ দেয়ার পরও আজিজুল ইসলামকে (মামলার আরেক আসামী) নিরাপত্তা জামানতের এক লাখ আশি হাজার টাকা কেন দেয়া হয়নি। এই ব্যাপারে আমার কোন কিছু করার নেই। এমনটি বলার পর ড. ইকবাল কবির জাহিদ ও আজিজুল ইসলাম তাকে অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজসহ এলোপাতাড়ি মারধর করেন। তার চিৎকার শুনে অনেকেই সেখানে ছুটে আসেন। তখন অধ্যাপক ইকবাল কবির জাহিদ ও আজিজুল ইসলাম ২৪ ঘন্টার মধ্যে জামানতের ফেরত না দিলে খুন জখমের হুমকি দিয়ে চলে যান। তারা সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর অন্যদের সহযোগীতায় তিনি জেনারেল হাসপাতালে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে জরুরি চিকিৎসা দেন।
মিজানুর রহমান জানান, রাজশাহীর একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনারেটর সরবরাহ করে। ওই প্রতিষ্ঠানের ১৮ লাখ টাকার প্রকল্পের বিপরীতে জামানত হিসেবে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা জমা রাখা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওই টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত ছাত্র আজিজকে দিতে চাপ দিচ্ছিলেন অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদ। একাধিকবার তিনি সুপারিশ করেন। কিন্তু নিয়মের বাইরে টাকা দিতে পারবেন না বলে তাকে জানানো হলে তার ওপর ওপর ক্ষুব্ধ হন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের অভিযোগ সঠিক নয়। মিজানুর ও আজিজের মধ্যকার কথা কাটাকাটি চলছিল। তাদের থামাতে এগিয়ে গিয়েছিলাম। আমি তাকে মারপিট করিনি।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যালারির সাউন্ড সিস্টেমের দুর্নীতির বিষয়ে একটি তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছিলাম। ওই রিপোর্টে প্রকৌশলী মিজানুর রহমান অভিযুক্ত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনো তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। তার বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট দেয়ায় আমার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। এজন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা নাটক সাজাচ্ছে।