প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে অনলাইন ক্লাস! - দৈনিকশিক্ষা

প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে অনলাইন ক্লাস!

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

জর্জিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় মিউনিসিপ্যালিটি আখমেটায় আলেকসান্দ্রে টিসোটসকোলারি নামের ১১ বছর বয়সী এক শিশুর বাস। করোনার প্রাদুর্ভাবের আগে সে প্রতিদিনই স্কুল যেত। তবে দেশটিতে করোনার সংক্রমণ শুরু হলে সেখানকার সরকার সব শিক্ষা প্ৰতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে এবং অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে। নিজ গ্রামে ইন্টারনেটে সংযোগ না পাওয়ায় প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার পথ হেঁটে এক কুঁড়েতে গিয়ে অনলাইনে ক্লাস করছে ছোট্ট আলেকসান্দ্রে।

আলেকসান্দ্রে আখমেটা মিউনিসিপ্যালিটির খেভিসচালা গ্রামের অধিবাসী।

এক সাক্ষাৎকারে আলেকসান্দ্রে জানিয়েছে, প্রতিদিন সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে আমার স্কুল শুরু হয়। আগে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা ক্লাস হতো তবে বর্তমানে ক্লাসের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাবা আমাকে ক্লাস করার জন্য বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে একটা ছোটো কুঁড়েঘর বানিয়ে দিয়েছেন। 

বাড়ি থেকে কুঁড়েঘরে পৌঁছাতে পথে কয়েকটা ছোটো নদী পার হতে হয় আলেকসান্দ্রেকে।

সে জানায়, প্রথমদিকে এ কুঁড়েঘরের সামনে একটি ছোটো দরজা ছিলো, পরে সেটিকে সরিয়ে ফেলা হয় কেননা এ ধরণের দরজা ইন্টারনেট সিগন্যালের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। কয়েকদিন আগে আমার একমাত্র কম্পিউটারটিও নষ্ট হয়ে যায়, এখন তাই অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার জন্য আমার একমাত্র ভরসা মোবাইল ফোন। কিন্তু সব সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করেও ক্লাসে যোগ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। 

আলেকসান্দ্রের মা জানান, তিনি কয়েকবার তার ছেলেকে স্থানীয় একটি স্কুলে ভর্তির চেষ্টা করেছিলেন, তবে মূল প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে তার পরিবারের কারও নিজস্ব গাড়ি নেই। 

 

জর্জিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে তিনি পরিবহন সমস্যার কথা উল্লেখ করে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন। তবে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখনও এ সমস্যা সমাধানে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে তিনি জানান। 

আলেক্সান্দ্রের গ্রামের বেশিরভাগ অধিবাসী প্রবীণ এবং পুরো গ্রামের মধ্যে একমাত্র সে স্কুলে যায়। এ কারণে সেখানে ইন্টারনেট পরিষেবা সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে কারও তেমন উদ্যোগ নেই বলে তার মা জানান।

আলেকজান্দ্রে আরও বলেন, আমি আমার গ্রাম ও পরিবারকে অত্যন্ত ভালোবাসি। আমি কেবলমাত্র অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার জন্য নিজের গ্রাম কিংবা বাবা-মাকে ছেড়ে দূরের শহরে যেতে চাই না। অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে প্রতিদিন আমাকে সকাল ৭টায় ঘুম থেকে উঠতে হয়, হেঁটে ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া সত্যি অনেক দুঃসাধ্য একটি কাজ। কেউ আমাকে এ সময়ে একটা গাড়ির ব্যবস্থা করে দিল আমার খুব ভালো হতো। 

দেশটির সর্বত্র এখনও উন্নত অবকাঠামো না থাকায় এবং একইসঙ্গে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে দেশটির একটি বড় অংশের মানুষের কাছে এখনও ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছায়নি। 

স্থানীয় গণামধ্যম এমটিসামবেবি অ্যাজেন্সির রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে জর্জিয়াতে তিন থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রায় ৬ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ শিশু রয়েছে যারা দেশটির বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করছে। এদের মাঝে প্রায় ৫০ হাজার ৪০০ শিশু এখনও ইন্টারনেট পরিষেবা থেকে বঞ্চিত এবং অনেকের নিজস্ব কম্পিউটারও নেই।

নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061690807342529