বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির স্ত্রী জুতা দিয়ে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবারের এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন ওই শিক্ষক।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম কবির জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই প্রধান শিক্ষক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এরপর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আগামী রোববার আলোচনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধান শিক্ষক জানান, গত বুধবার তিনি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করছিলেন। এর মধ্যে বেলা পৌনে ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের সভাপতি মামদুদুর রহমান রিপনের স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়া লিজা স্কুলে আসেন। তিনি ‘কথা আছে’ বলে প্রধান শিক্ষককে শ্রেণিকক্ষ থেকে অফিস কক্ষে ডেকে নেন। সেখানে তখন আরও কয়েকজন শিক্ষক, অভিভাবক ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সামনেই সভাপতির স্ত্রী প্রধান শিক্ষককে বলেন, ‘আপনার নামে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠতে পারে। আপনি বদলি হয়ে অন্য বিদ্যালয়ে চলে যান।’ এ নিয়ে কথার একপর্যায়ে সভাপতির স্ত্রী নিজের পা থেকে জুতা খুলে প্রধান শিক্ষককে মারতে থাকেন। এরপর ওই নারী স্কুল থেকে চলে যান। বিষয়টি জানাজানি হলে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সুজন এসে মীমাংসার চেষ্টা করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জান্নাতুল মাওয়া লিজা বলেন, ‘এ ঘটনা তো বুধবারই মীমাংসা হয়ে গেছে। আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব এসে ঘটনাটির মীমাংসা করে দিয়েছেন।’
আর লিজার স্বামী বিদ্যালয়ের সভাপতি মামদুদুর রহমান রিপন বলেন, ‘এটি ছিল একটি মিস্টেক ঘটনা, সেটি তো আপস-মীমাংসা হয়েই গেছে।’
তবে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর দুপুরে আমি বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। তবে আমি মিটমাট করে দিইনি। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ঠিক নয়। শিক্ষককে মারধর করার ঘটনা খুবই দুঃখজনক।’
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলে নূর নান্নু বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও ইউএনও সাহেবের কাছে অভিযোগ করব। শিক্ষকদের যে যার মতো মারধর বা অপমান করবে, এটা ঠিক নয়।’