বরিশাল সিটি কলেজে প্রভাষকের হাতে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত হয়েছেন। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, অধ্যক্ষ ও ওই প্রভাষক তর্কবিতর্ক করছেন। একজন আরেকজনকে গালাগাল করছেন। একপর্যায়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. কাওছার হোসেন উত্তেজিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজিত কুমার দেবনাথের টেবিলে থাপ্পড় দিয়ে কথা বলেন।
এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে কলেজের ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ে। তারা বরিশাল জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এর সঠিক বিচার দাবি করেন। কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তদন্ত করে দেখব। এর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের নোটিশ করা হবে।
সাড়ে ৬ মিনিটের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলেজের অফিস কক্ষে তালা দেন প্রভাষক মো. কাওছার হোসেন। পাশাপাশি ওই দুর্নীতির কারণ ও জবাব চান তিনি। কথোপকথনে দেখা যায়, অধ্যক্ষ সুজিত বলছেন, ‘কলেজের এক টাকাও ব্যাংকে রাখা হয় না। কয়েকজন স্যার সহকারী অধ্যাপক হইতে পারে নাই। তাই তাদের অস্থিরতা। বিষয়টাকে অন্যদিকে ডাইভারট করছে। শুধু শুধু এই সমস্ত কথা বলে লাভ নাই তো। সেটা সত্য ঘটনা। সার্টিফিকেট ভুয়া, ডিসি স্যার তাই সহকারী অধ্যাপক করেননি। এখন সেই দায় কি আমার।’ এ সময় প্রভাষক কাওছার বলেন, ‘আপনারে চান্দা দিয়া কাজ করতে হবে। আপনার দুর্নীতির নেই অভাব।’ অধ্যক্ষ সুজিত বলেন, ‘ও এখন চান্দাবাজির মধ্যে নিছো।’ প্রভাষক কাওছার বলেন, ‘আপনে করেন চান্দাবাজি, আপনে চান্দাবাজ।’ অধ্যক্ষ সুজিত বলেন, ‘তুমি ডিসির কাছে যাইয়া কইও।’ প্রভাষক কাওছার বলেন, ‘আমার ডিসিরে পাওয়া লাগবে না, আমরা ৬ মাস বইয়া ডিসিরে পাই না। আপনে প্রতি রাইতেই ডিসিরে পান। তাইলে এটা কী করে সম্ভব। অধ্যক্ষ লাখ লাখ টাকার দুর্নীতি করে পকেট ভরেন।’
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ সুজিত কুমার দেবনাথ বলেন, কাওছার অনৈতিক কাজ করে। আচরণ খারাপ করেছে। ওর অভিযোগ থাকলে সে ডিসিকে বলতে পারত। উলটো অফিস কক্ষে তালা মেরেছে। আমি ভিডিও ভাইরাল হওয়া এবং ওর আচরণের কথা গভর্নিং বডির মিটিংয়ে তুলব।
এ ব্যাপারে সিটি কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. কাওসার হোসেন বলেন, বেসরকারি একটি কলেজে তিন মাস পরপর অডিট হওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু অধ্যক্ষ সুজিত কুমার দেবনাথের দায়িত্ব পালন ৭ বছর। এখন পর্যন্ত কলেজে কোনো অডিট হয়নি। তিনি বলেন, সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অফিসে নানা অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করে অধ্যক্ষ সুজিত। মো. কাওসার হোসেন আরও বলেন, তিনি শিক্ষার্থীদের টাকা আত্মসাৎ করেন। এসব বিষয়ে জবাব চাইতে গেলে এই ভিডিও ভাইরাল হয়।