গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগটিয়া চালা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি উত্তীর্ণদের প্রশংসাপত্র ও মার্কশিট দিতে টাকা নেয়ার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত অফিস সহকারীকে জরিমানা করেছে। এমন একটি প্রতিবেদন দেখেছি দৈনিক শিক্ষাডটকমে। আদালতের রায় শিরোধার্য। এমন অভিযোগের আরও অনেক সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। সব সংবাদ প্রকাশিত না হলেও বাস্তবে সারা দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই প্রশংসাপত্র দিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কম-বেশি টাকা দিয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। দিয়ে এসেছি আমরাও। ফলে এটি একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামান্য আয়ের উৎসও এটি। এই খাতে কিছু ব্যয়ও আছে প্রতিষ্ঠানের। শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষও সনদের জন্য একটা ফি নিয়ে থাকে।
আমার জানামতে শিক্ষা প্রশাসন এমন কোন সার্কুলার বা আদেশ এখনো জারি করেনি যে, 'শিক্ষার্থীদের প্রসংশাপত্র দিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কোন ফি নিতে পারবে না।' অথবা, 'প্রশংসাপত্র দিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এতো টাকা ফি নিতে পারবে।' সরাসরি এমন কোন আদেশ না থাকার সুযোগে একেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একেক ভাবে এই ফি নির্ধারণ করছে ও নিচ্ছে। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। এটি অবশ্যই সারা দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে চলমান একটি বিশৃঙ্খলা। এই বিশৃঙ্খলা যে কেবল ঘাগটিয়া চালা উচ্চ বিদ্যালয়ের মতো বেসরকারি স্কুল, কলেজ বা মাদরাসায় বিদ্যমান তা বলা যাবে না। প্রাইভেটসহ সরকারি ও বিশেষায়িত বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও আছে টেস্টিমোনিয়াল ফি নেয়ার রেওয়াজ। যদি এই ফি নেয়া অপরাধ হয়, সেটিও খতিয়ে দেখা উচিত।
মোটকথা প্রশংসাপত্র দিতে সুনির্দিষ্ট ফি নেয়ার অথবা একেবারেই না নেয়ার একটা সরকারি আদেশ এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উভয় পক্ষের যৌক্তিক স্বার্থ বিবেচনায় রেখেই হওয়া উচিত সেই আদেশ। অতি দ্রুত নিরসন করা জরুরি প্রসংশাপত্র ইস্যুতে বিরাজমান বিশৃঙ্খলা ও অসমতা। এমন ভাবা মোটেও উচিত নয়- যেমনি চলছে তেমনি চলুক। যে ধরা পড়বে সে শাস্তি পাবে, যে ধরা পড়বে না সে সর খাবে।
লেখক : অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ্, কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, ঢাকা।