চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা দুদিন সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত কাজ শেষ করে ফিরে গেছেন। এ ঘটনার পর সাময়িক বরখাস্ত হওয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান শারীরিক জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ইউএনও দীপক কুমার দেব গত ১১ সেপ্টেম্বর এক আদেশে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও অন্যান্য গোপনীয় কাগজ পত্র যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন জমা দেবার জন্য উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমানকে দায়িত্ব দেন। এতে বলা হয়, ভূরুঙ্গামারী থানায় প্রশ্ন পত্র ও অন্যান্য গোপনীয় কাগজপত্র সংরক্ষিত রয়েছে। সিলগালাকৃত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও অন্যান্য গোপনীয় কাগজপত্র বিবরণী মোতাবেক সঠিক আছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করে ১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের করার জন্য অনুরোধ করেন। এদিকে দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ মেলায় উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় চলতি এসএসসি, দাখিল, এসএসসি (ভোকেশনাল) এবং দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর এসব বিভাগের শত শত শিক্ষার্থীর জন্য বোর্ড কর্তৃক পরীক্ষার জন্য প্রদত্ত কয়েক হাজার প্রশ্নপত্র সেটের প্যাকেট পাঠিয়ে দেয়। এসব প্যাকেট থেকে প্রশ্ন সর্টিং এবং যাচাই-বাছাই করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একজন প্রতিবেদন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন। এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার দেব শর্মাকে শোকজ করেছেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক। গত বুধবার তিন কর্মদিবসের সময় দিয়ে শোকজের জবাব দিতে বলা হয় ওই শোকজ পত্রে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিধি মোতাবেক ইউএনও দীপক কুমার দেব পরীক্ষার ব্যাপারে সব ধরনের চিঠি ইস্যু করেছেন। তারপরেও কোনো গাফিলতি আছে কি-না বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইউএনওকে শোকজ করা হয়েছে। তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। শোকজের জবাব পেলে পরবর্তীতে করণীয় ঠিক করা হবে। গত বুধবারই ইউএনওকে শোকজ করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার দেব শর্মাকে একাধিবার মোবাইলে ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় চলতি এসএসসি পরীক্ষার ইংরেজি প্রথম এবং দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের নজরে এলে নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুরে ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা এসএসসির ছয়টি বিষয়ের প্রশ্নপত্র উদ্ধার করেন। বুধবার দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের গণিত, কৃষিশিক্ষা, পদার্থবিজ্ঞান ও রয়ায়ন পরীক্ষা স্থগিত করার ঘোষণা আসে। পরে বৃহস্পতিবার পরীক্ষার নতুন সময়সূচি ঘোষণা করে শিক্ষা বোর্ড।