কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেফতার ও পলাতক সাত শিক্ষক-কর্মচারী জড়িত বলে তদন্তে উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার সকালে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে তদন্ত কমিটির সদস্যরা লিখিতভাবে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
তিনি আরও জানান, প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। আগামী সপ্তাহের রোববার অথবা সোমবার লিখিতভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন তারা। এখন কমিটি যা পেয়েছে তাতে করে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় মূল হোতা হিসেবে মোট সাতজন জড়িত। তাদের মধ্যে ৬ জনকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করেছে। বাকী একজন বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রফেসর কামরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় আরও যারা জড়িত তাদেরকে বের করতে গ্রেফতারদের রিমান্ডে নিতে হবে। এই ঘটনায় কোনভাবেই ট্যাগ কর্মকর্তা দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না। তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রশ্নফাঁসে জড়িতরা হলেন, কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমান, ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর রহমান, ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক জোবাইর রহমান, কৃষি বিজ্ঞানের শিক্ষক হামিদুল ইসলাম, বাংলা শিক্ষক সোহের চৌধুরী, অফিস সহকারী আবু হানিফ ও পিয়ন সুজন মিয়া। এই ঘটনার পর ওই বিদ্যালয়ের বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আবু হানিফ পলাতক রয়েছেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজি ১ম পত্র ও ইংরেজি ২য় পত্র পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠে। এরপর ওই কেন্দ্রের সচিব লুৎফর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে তার আলমারি থেকে গণিত (আবশ্যিক), উচ্চতর গণিত, কৃষিশিক্ষা, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পেরে প্রতিবেদন দিলে ঘটনাস্থলে তদন্ত করতে যান কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ২০ সেপ্টেম্বর রাতে ট্যাগ অফিসার ও কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আদম মালিক চৌধুরী বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত ৪জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, কৃষি বিজ্ঞান ও রসায়ন পরীক্ষা স্থগিত করেন। পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর স্থগিত হওয়া ৪টি পরীক্ষার নতুন সময়সূচি ঘোষণা করা হয়। একই সাথে জীব বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) ও উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়) এর প্রশ্নপত্র বাতিল করা হয়। ওই দিনই এই ঘটনায় দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ফারাজ উদ্দিন তালুকদারকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন শিক্ষাবোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর হারুন অর রশীদ মন্ডল এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রংপুর বিভাগীয় উপপরিচালক আখতারুজ্জামান। কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলা হয়েছিলো।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।