এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেতনভাতা ইএফটির মাধ্যমে সরাসরি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এমপিও অর্থ জিটুপি (গর্ভমেন্ট টু পারসন) পদ্ধতিতে ইএফটির (ইলেকট্রনিক ট্রান্সফার) মাধ্যমে পাঠানো হবে। এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষক-কর্মচারীদের হালনাগাদ তথ্য চেয়েছে। বুধবার (১৩ জানুয়ারি) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
চিঠিতে আরও জানা যায়, চাওয়া নয়টি তথ্য—১. শিক্ষক-কর্মচারীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, ২. এসএসসি ও সমমানের সনদ অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারীর নাম (এসএসসি ও সমমানের সনদ অনুযায়ী এমপিও শিট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম একই রকম হতে হবে), ৩. যাদের এসএসসি ও সমমানের সনদ নেই তাদের সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (এমপিও শিট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম একই হতে হবে), ৪. ব্যাংক হিসাবের নাম শিক্ষক-কর্মচারীদের নিজ নামে থাকতে হবে, ৫. ব্যাংকের নাম, শাখার নাম ও রাউটিং নম্বর, ৬. শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যাংক হিসাব নম্বর (অনলাইন ব্যাংক হিসাব নম্বর ১৩ থেকে ১৭ ডিজিট), ৭. শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্মতারিখ, ৮. শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন কোড, ৯. শিক্ষক-কর্মচারীদের মোবাইলফোন নম্বর। এসব তথ্য হালনাগাদ না থাকলে এমপিওর অর্থ শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যাংক হিসাবে জমা হবে না। সরকারের এই সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে উত্সাহ দেখা দিয়েছে।
তবে ‘শিক্ষা সনদ অনুযায়ী এমপিও শিট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম একই রকম হতে হবে’—তথ্য হালনাগাদ নিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে উদ্বেগ ও উত্কণ্ঠা বিরাজ করছে। কেননা এমপিও শিটে বেশিরভাগ শিক্ষক-কর্মচারীদের নামের বানান ভুল রয়েছে। শিক্ষা সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নামের ইংরেজি বানানে আক্ষরিক গরমিল আছে।
শিক্ষা সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রে পুরো নাম থাকলেও এমপিও শিটে এসেছে সংক্ষিপ্ত নাম। অনেকের ক্ষেত্রে নামের অক্ষর ভুল। শিক্ষা সনদে বাংলায় ‘মোহাম্মদ’ এবং ইংরেজিতে Mohammed/Mohammad থাকলেও সংক্ষিপ্ত রূপ এসেছে MD। এমপিও শিটে অনেকের নামের অংশে I-এর স্থলে E, A-এর স্থলে O রয়েছে। ইতিপূর্বে অনেকে ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন করলেও কোনো লাভ হয়নি। অথচ এমপিওভুক্তির সময় এমপিওর নির্ধারিত ফরমে শিক্ষা সনদ অনুযায়ী বাংলা ও ইংরেজি বানান স্পষ্ট করে লেখা হয়েছে। অন্যদিকে এনআইডি সিস্টেম চালুর আগে বহু শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্ত হয়েছেন। এছাড়াও বহু শিক্ষক-কর্মচারীর শিক্ষা সনদ বাংলা ভার্সনে। ফলে এমপিও শিটে ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। এই ভুল কিভাবে সহজভাবে সংশোধন করা যায় তা চিন্তা করা দরকার।আমি মনে করি ইদানীং এসব ভুল সংশোধন কোনো ব্যাপারই নয়। এমপিও শিটে সংশোধন পদ্ধতি সবার জন্য ওপেন করে দিলে যার যারটা সে সে সংশোধন করে নিতে পারবে। অথবা সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছে সিস্টেমটি পাঠালে প্রতিষ্ঠানে বসেও সংশোধন করা যাবে। এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে উদ্যোগী ও আন্তরিক হতে হবে। পরিশেষে, নামের ভুল সংশোধনপূর্বক এমপিও শিট হালনাগাদের মাধ্যমে ইফটিতে বেতন চালুর ব্যবস্থা করা হোক।
লেখক : মোহাম্মদ ইলিয়াছ, সহ. অধ্যাপক, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম