প্রাইভেটের টাকা না দেয়ায় শিক্ষকের মারধরে দুই ছাত্রী হাসপাতালে - দৈনিকশিক্ষা

প্রাইভেটের টাকা না দেয়ায় শিক্ষকের মারধরে দুই ছাত্রী হাসপাতালে

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি |

লক্ষ্মীপুরে প্রাইভেটের টাকা না দেয়ায় পরীক্ষার হলে ফাতেমা আক্তার মীম ও নুহা আক্তার নামে দুই ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। লক্ষ্মীপুর দারুল উলুম কামিল মাদরাসার বাংলা বিষয়ের শিক্ষক সালমা আক্তার এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসেনের কাছে এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ করেছেন আহত ছাত্রী ফাতেমার মা মর্জিনা বেগম। এর আগে সকালে মাদরাসায় পরীক্ষা চলাকালে ওই শিক্ষক দুই ছাত্রীকে মারধর করেন।

ভুক্তভোগী ফাতেমা নবম শ্রেণির ছাত্রী ও নুহা ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। ফাতেমা সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের পার্বতীনগর গ্রামের দুলাল হোসেনের মেয়ে। তার মুখে শিক্ষকের নখের আঁছড়ের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া নুহা একই মাদরাসার ইবতেদায়ী শিক্ষক খবির উদ্দিনের মেয়ে। তাদেরকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

মাদরাসার শিক্ষক ও ভুক্তভোগী শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফাতেমা এক সময় সালমার কাছে বাংলা বিষয়ে প্রাইভেট পড়তো। তখন ১০ দিন পড়েই ফাতেমা আর পড়তে যায়নি। তবে ওই ১০ দিনের টাকা দিতে চেয়েছিল সে, কিন্তু শিক্ষক টাকা নেননি। মঙ্গলবার সকালে ফাতেমা হাদিস বিষয়ে পরীক্ষা দিতে আসে। পরীক্ষার হলে সালমা ও শিক্ষক আবদুল জলিল দায়িত্বে ছিলেন। সেখানে দুই শিক্ষকের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। হঠাৎ করে সালমার দৃষ্টি পড়ে ফাতেমার দিকে। এ সময় রাগান্বিত হয়ে তার উদ্দেশ্যে সালমা বলেন, ‘তুই তো আমার টাকা দিলি না।’ এ সময় তাকে গালমন্দও করেন। একপর্যায়ে তাকে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় দিতে থাকেন। এ সময় পাশে থাকা নুহাকেও তিনি চড়-থাপ্পড় মারেন। তখন ফাতেমার মুখে নখের আঁচড় দিয়ে জখম করেন শিক্ষক সালমা।  

খবর পেয়ে ফাতেমার মা মর্জিনা মাদরাসায় আসেন। এ সময় মেয়ের মুখে রক্ত দেখে তিনি চিৎকার করে কান্না শুরু করেন। চিৎকার করে তিনি মেয়ের অপরাধের বিষয়ে জানতে চান।

ফাতেমা আক্তার মীম বলে, সবার সামনে শিক্ষক সালমা তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। তিনি আমার মুখের হিজাব টেনে খুলে ফেলেন। এ সময় তার নখ লেগে আমার মুখ রক্তাক্ত হয়। কখনো মা-বাবা আমাকে মারেনি। আমার কিছু হলে এ মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষক সালমা দায়ী থাকবে। সবার সামনে আমাকে মারার ঘটনা লজ্জাজনক। কীভাবে আমি সবার সামনে মুখ দেখাবো? 

ফাতেমার মা মর্জিনা বেগম বলেন, আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই। আমি ইউএনও ও সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। অপরাধ না করেও আমার মেয়ে মারধরের শিকার হয়েছে। এটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা।

নুহার বাবা শিক্ষক খবির উদ্দিন বলেন, আমার মেয়েকে অন্যায়ভাবে শিক্ষক সালমা কয়েকটি থাপ্পড় দিয়েছে। তাৎক্ষণিক আমার মেয়েই অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করেছে। আমি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দের কাছে অভিযোগ করবো।

অভিযুক্ত শিক্ষক সালমা বলেন, মীম আমার কাছে পাঁচ মাস প্রাইভেট পড়েছে। হঠাৎ করে সে প্রাইভেট পড়া বন্ধ করে দেয়। সে আমার টাকাও দেয়নি। উল্টো সে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছিল। এজন্য তাকে চড়-থাপ্পড় দিয়েছি। এখানে দোষের কিছু নেই।

মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নেছার উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক। শিক্ষকের এই কাণ্ড মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। শিক্ষক এ ধরণের ঘটনা কোনোভাবেই ঘটাতে পারেন না। 

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, আহত ছাত্রী ফাতেমা লিখিত অভিযোগ করেছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বক্তব্য জানতে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসেনের মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। বিস্তারিত জেনে এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0062329769134521